মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা জানিয়েছেন যে, ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে আমাদের দেশ ধর্ষণমুক্ত হবে। তিনি বলেন, শুধু আইন ও সরকার দিয়ে সবকিছু কিন্তু করা সম্ভব নয়।
সরকারের সঙ্গে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি কাজ করি তাহলে অবশ্যই হবে। ধর্ষক ধর্ষকই। তার পরিচয় ধর্ষক। তার অন্য কোনো পরিচয় থাকতে পারে না। এখানে পরিবারেরও দায়িত্ব অনেক। আজ সোমবার (১২ অক্টোবর) সচিবালয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, নারী ও শিশু ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। সমাজে নারী বা শিশু নির্যাতন কঠোরভাবে দমন ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ প্রণয়ন করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যমান আইনটি সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়।
‘আজকের মন্ত্রিপরিষদ সভায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯(১) ধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অনুমোদিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ন আরো একধাপ এগিয়ে গেলো। সেজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং নারী সমাজের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ’
একই সঙ্গে আইনমন্ত্রীকেও সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি যারা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবিতে রাজপথে এবং বিভিন্ন মাধ্যমে জোরালো বক্তব্য ও পদক্ষেপ নিয়েছেন তাদেরও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে আমাদের দেশ ধর্ষণমুক্ত হবে। আমি চাই না কোনো একজন নারী বা শিশু ধর্ষিত হোক। সমাজ থেকে ধর্ষণ নির্মূলে পরিবার, বিভিন্ন মিডিয়া ও কমিউনিটির দায়িত্ব রয়েছে।
এই সংশোধনের মাধ্যমে কি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রালয়ের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনতো মাত্র অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ নেই তাই অধ্যাদেশের মাধ্যমে আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। নভেম্বরে সম্ভবত সংসদ অধিবেশন বসবে। তখন আমরা এই অধ্যাদেশ আইনে পরিণত করতে একটি বিল নিয়ে আসবো। আগামীকালই অধ্যাদেশ হয়ে যাবে।
নতুন এই সংশোধীত অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি নতুন যে সংশধনী আনা হয়েছে সেটা কাজ করবে। বিচারের দীর্ঘ প্রক্রিয়াটাও কমে আসবে। ধর্ষণের যে বিচার তা দ্রুত হওয়ার জন্য যে প্রক্রিয়া থাকে, ধর্ষকতো বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা হয়নি, সেখানে পাড়া-মহল্লা যদি ধর্ষিতকে সহযোগিতা করে তাহলে এর বিচারকার্য দ্রুত হবে।
‘আমি বিশ্বাস করি আইনের সঠিক প্রয়োগ, ইতিবাচক মানসিকতা ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে সমাজ ধর্ষণমুক্ত হবে এবং যারা এ অপরাধে জড়িত হবে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বাংলার মানুষ অচিরেই স্বচক্ষে দেখতে পাবে। ’