আজ সোমবার রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের অবৈধ অস্ত্র ও গুলি রাখার অভিযোগের মামলার রায় ঘোষণা করবেন আদালত। এই মামলার রায় আজ দুপুর ২টায় ঢাকা মহানগর ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে ঘোষণার কথা রয়েছে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। এ মামলায় রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যাশা সম্পর্কে ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউর তাপস কুমার পাল বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।’ সাহেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন বলে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করছেন। তাই রায়ে সাহেদ করিমের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলছে, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সাহেদ খালাস পাবেন।
অস্ত্র আইনের মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের সর্বনিম্ন ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। সাহেদের বিরুদ্ধে মোট ৩২টি মামলার খবর জানা আছে তার আইনজীবী মো. মনিরুজ্জোমানের। তিনি বলেন, “অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্রে তার বিরুদ্ধে ২০টি মামলার তথ্য দেওয়া আছে। কিন্ত এর বাইরেও ১০টি মামলার সন্ধান পেয়েছি আমরা। সাহেদের বিরুদ্ধে মামলার বেশিরভাগই প্রতারণার অভিযোগে করা।“ তবে সাহেদের বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তা আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের জানাতে পারেননি রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু।
প্রসঙ্গত, করোনা টেস্ট না করে ভুয়া রিপোর্ট ও ভুয়া নেগেটিভ ও পজেটিভ সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে গত ১৫ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় ১০ টি মামলা হয়েছে। যে মামলাগুলোর মধ্যে অস্ত্র মামলায়ই প্রথম রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে আদালত।
রায়ের অস্ত্র গত ১৬ সেপ্টেম্বর আদালত ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এর আগে একই আদালত গত ২৭ আগস্ট এ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন। তারও আগে গত ৩০ জুলাই এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে এ মামলায় সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
করোনা টেস্ট না করে ভুয়া রিপোর্ট ও ভুয়া নেগেটিভ ও পজেটিভ সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাহেদকে সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা থেকে গত ১৫ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৬ জুলাই তার ওই মামলায় দশ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সিএমএম আদালত। রিমান্ডে নিয়ে তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে উত্তরার তার একটি কার্যালয় থেকে অবৈধ অস্ত্র ও এবং জাল টাকা উদ্ধার করেন। ওই ঘটনায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের চার মামলায় গত ২৬ জুলাই আদালত তার ৭ দিন করে ২৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে গত ১০ আগস্ট পদ্মা ব্যাংকের দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৬ জুলাই র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিল তারা। র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অন্তত ছয় হাজার ভুয়া করোনা পরীক্ষার সনদ পাওয়ার প্রমাণ পায়। একদিন পর গত ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে র্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। এরপর সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ওই দিনই উত্তরা পশ্চিম থানায় এ মামলা দায়ের করেন।