ইলিশের উৎপাদন আরো ৩০ শতাংশ বাড়াতে ২৪৬ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নিতে যাচ্ছে সরকার। প্রকল্পের আওতায় মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন সহ ৩০ হাজার জেলে পরিবারের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান ও জেলেদের মাঝে দশ হাজার বৈধ জাল বিতরণ করা হবে। এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায়। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এটিসহ মোট ছয়টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে উপস্থিত থাকবেন। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পলস্নী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগে ইলিশের উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটির সঠিক বাস্তবায়ন হলে ইলিশ উৎপাদনে আরো সমৃদ্ধ হবে বাংলাদেশ। ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রমে সুরক্ষা দেওয়া হবে এই প্রকল্পের আওতায়। নিম্ন মেঘনা, তেঁতুলিয়া নদী, আন্ধারমানিক ও নিম্ন পদ্মা মহোনায় নির্দিষ্ট সময়ে মা ইলিশ আহরণ বন্ধ করা হবে। বাংলাদেশের প্রায় সব প্রধান নদ-নদী, মোহনা এবং উপকূলে ইলিশ মাছ ডিম ছাড়ে। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ইলিশের চারটি প্রজননক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় ইলিশের ছয়টি অভয়াশ্রম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করা হবে। ইলিশ অভয়াশ্রম সংলগ্ন ১৫৪টি ইউনিয়নের জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে ১ হাজার ২৩২টি সভা, ৬০টি নানা ধরনের কর্মশালা ও অভিযান পরিচালনা করা হবে। এর জন্য ১৯টি বোট কেনাসহ মা ইলিশ সংরক্ষণে ১৩ হাজার ৪০০টি মোবাইল কোর্ট ও জেলে পরিবারে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ১৮ হাজার জেলেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দেশে মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশের অবদান সর্বোচ্চ ১৯ শতাংশ। জিডিপির ১ শতাংশে অবদান রাখে ইলিশ। ইলিশ আহরণ উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের আয়ের প্রধান উৎস। প্রায় ৫ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে জড়িত।