‘কুমিল্লা বীরচন্দ্র পাঠাগার ও মিলনায়তন ভাঙা হবে না বলে জানিয়েছেন, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এক\’শ বছরের বেশি হলে কোনো স্থাপনা ভাঙা যায় না। ওটা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে চলে যায়। কুমিল্লার চমৎকার দৃষ্টিনন্দন ঐতিহ্যবাহী ভবনটি রক্ষার জন্য শিগগির আমরা গেজেট করব।’
আজ বুধবার সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ ব্যাপারে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে বলেও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী জানান।
কুমিল্লা বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন। স্থাপত্যশৈলীর এক অনন্য নিদর্শন এটি, যা সবার কাছে কুমিল্লা টাউন হল নামে পরিচিত। অবিভক্ত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজপরিবারের স্মৃতি বহন করা টাউন হলটি কুমিল্লাবাসীর গৌরবেরও প্রতীক। কুমিল্লায় ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধসহ বিভিন্ন স্বাধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুও ছিল এই টাউন হল।
১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ে অবস্থিত এই টাউন হলকে কেন্দ্র করেই বিকশিত হয়েছে কুমিল্লার শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, আর্থসামাজিক ও কল্যাণমুখী নানান কাজ। এখানে পদধূলি পড়েছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতো মহাত্মজনের।
এসব স্মৃতিচিহ্ন ধুলায় মিশিয়ে দেওয়ার আয়োজন সম্পন্ন করে। কালের সাক্ষী ১৩৫ বছরের পুরোনো সেই বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তনকে ভেঙে নতুন স্থাপনা তৈরির পরিকল্পনা নেয় প্রশাসন। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লেখক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীরা সমালোচনামুখর হয়েছেন।
তাদের দাবি- টাউন হলটি ভেঙে ফেলা হলে কুমিল্লার ইতিহাস-ঐতিহ্যে আঘাত করা হবে। তাদের ভাষ্য, সবাই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা চায়, উন্নয়ন চায়। তবে সেটা ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে নয়। এরই প্রেক্ষিতে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের ‘কুমিল্লা বীরচন্দ্র পাঠাগার ও মিলনায়তন ভাঙা হবে না\’ বক্তব্য এলো।