কৃষিমন্ত্রী ডা. আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন যে, বাংলার দুঃখী মানুষ কৃষক-শ্রমিকের জন্য বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা অকৃত্রিম ছিল। তিনি বলেন, কৃষি দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের জিডিপিতে কৃষির অবদান কমে আসলেও কৃষির গুরুত্ব কমে নাই। কৃষির উন্নয়নই দেশের অন্যান্য উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে থাকে। এজন্য কৃষিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
শনিবার (২৯ আগস্ট) সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং শিল্প মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক উপস্থিত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের ৬০-৭০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। এসব মানুষের এখনও জীবিকার মূল উৎস কৃষি। কৃষিতে আমাদের অর্জন অনেক। এজন্য কৃষিবিদরা গর্ব বোধ করতে পারেন। তবে যারা মাঠে কাজ করে রোদে, বৃষ্টিতে পুড়ে তাদের রক্ত, ঘামকে সোনালি ফসলে রূপান্তর করে, সেই কৃষক সমাজের অবদান অনেক বেশি। তারা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আর্থসামাজিক উন্নয়নের একটা ভিত্তি হয়েছে এবং একটা সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ার পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
কৃষি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে কৃষিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। এছাড়া ১৯৭০ সালে নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু জাতির উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন কৃষির প্রতি যে অবহেলা করা হয়েছিল এটা অমার্জনীয়। কৃষি উন্নয়নের জন্য আমাদের বিপ্লব করতে হবে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবসে ব্ঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমাদের চাষী হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য আমাদের উদ্যোগের বিরাট অংশ অবশ্যই তাদের পিছনে নিয়োজিত করতে হবে’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এই পৃথিবীতে অনেক নেতা আসবে, অনেক নেতা এসেছে কিন্তু ব্ঙ্গবন্ধুর মতো মানবদরদী মহান নেতা আসবে না। সমুদ্রের গভীরতা মাপা যাবে, আপনারা আটলান্টিক মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরতা মাপতে পারবেন, কিন্তু বাঙালি জাতির প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসার গভীরতা আপনারা মাপতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধু সবসময় বাংলার মানুষ ও মাটির প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার বাংলার মাটি যদি থাকে, মানুষ যদি থাকে, একদিন এই বিধ্বস্ত বাংলাকেই আমি সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামল বাংলায় রূপান্তরিত করব।
ভার্চুয়াল সভায় বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সাজ্জাদুল হাসানের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে অংশ নেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও লেখক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল, বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতির মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুল হক কাজল, সাবেক সচিব মো. আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার প্রমুখ।