আগামী ৩০ আগস্ট পবিত্র আশুরা। আশুরা হলো ইসলামের একটি ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস। ইসলামিক পঞ্জিকা অনুযায়ী মুহররম এর দশম দিনকে আশুরা বলা হয়। এটি ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আশুরা উপলক্ষে খোলা স্থানে তাজিয়া মিছিল ও সমাবেশ না করে সবাইকে ইনডোরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
তবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরুত্ব মেনে ইনডোরে এসব অনুষ্ঠানগুলো পালন করতে হবে।
রোববার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় ডিএমপি সদর দফতরে পবিত্র আশুরা উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় ডিএমপি কমিশনার এ অনুরোধ জানান।
আশুরার অনুষ্ঠান স্থলে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ইমামবাড়াগুলোর আয়োজকদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, করোনা ভাইরাসের বিস্তার রুখতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এজন্য অনুষ্ঠান স্থলে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেবেন না। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য ইমামবাড়াগুলোতে সবাইকে একসঙ্গে না ঢুকিয়ে খণ্ড খণ্ড দলে বিভক্ত করে প্রবেশের ব্যবস্থা করা হোক। তবে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে বেশি সেখানে কাউকে অবস্থান করতে না দেওয়া পরামর্শ দেন তিনি।
শান্তিপূর্ণভাবে আশুরা উদযাপন করার আহ্বান জানিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে কোনো বিরোধ থাকলে শান্তিপূর্ণভাবে তা মীমাংসা করতে হবে। আশুরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি।
এসময় আশুরা উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় রাজধানীর নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাজধানীর নিরাপত্তার বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আশুরা কেন্দ্রিক ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও স্থানে পোশাক ও সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট দিয়ে সুইপিং করানো হবে। ইমামবাড়াসহ তার আশপাশে সিসি ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে ও ম্যানুয়ালি তল্লাশি করে আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে সবাইকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। ইমামবাড়াগুলোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আয়োজক কমিটি পরিচয়পত্রসহ পর্যাপ্ত সেচ্ছাসেবক থাকবে।
ইমামবাড়া কেন্দ্রিক যেসব স্বাস্থ্যবিধি আয়োজক কমিটিকে মানতে হবে উল্লেখ করে সভায় বলা হয়, প্রতিটি ইমামবাড়ার আলাদা আলাদা প্রবেশ পথ ও বর্হিপথ থাকবে। প্রবেশমুখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেসিন, পানির ট্যাংক, সাবান ও পৃথকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। গেটে জীবাণুনাশক চেম্বার স্থাপনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
এছাড়া গেটে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রসহ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। কোনোক্রমেই মাস্ক ছাড়া কাউকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। ইমামবাড়ায় সামাজিক দূরত্ব কমপক্ষে তিন ফুট কঠোরভাবে বজায় রাখতে হবে। করোনা সন্দেহজনক উপসর্গ নিয়ে কোনো ব্যক্তিকে ইমামবাড়ায় প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। করোনাকালীন বিশেষ পরিস্থিতিতে শিশু ও ষাটোর্ধ্ব এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের ইমামবাড়ায় প্রবেশে নিরুৎসাহিত করতে হবে।
এসময় সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি এবং লালবাগ, মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগের শিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।