‘পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছে মেজর সিনহা হত্যার তদন্ত’

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম কর্মপরিকল্পা অনুযায়ী এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান চট্টগ্রাম অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমান।

তদন্ত দলের প্রধান এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রথম বৈঠকেই কিছু কর্মপরিকল্পনা ঠিক করেছি।

সেই কর্মপরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগুচ্ছি, তদন্তের স্বার্থে যাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার আমরা সেটা করছি।
তিনি বলেন, আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি, আসল সত্যটা বেরিয়ে আসুক। আমরা আশা করছি সরকারের নির্ধারিত সাত কর্মদিবসের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করতে পারব।

গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজারের দিকে আসার পথে বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশির নামে গাড়ি থেকে নামিয়ে সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদকে গুলি করে হত্যা করেন তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মো. লিয়াকত আলী।

ঘটনার পর দিন প্রথমে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহজাহান আলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর একদিন পর শনিবার (২ আগস্ট) তা পুনর্গঠন করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে তদন্ত দলের প্রধান করা হয়।

কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন প্রতিনিধি, রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজারের এরিয়া কমান্ডারের একজন প্রতিনিধি, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) একজন প্রতিনিধি ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের একজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।

এ কমিটিকে সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনার কারণ, উৎস অনুসন্ধান এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তার করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট মতামত দিতে বলা হয়েছে।

গত ৪ আগস্ট কক্সবাজার সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে তদন্ত কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

একই ঘটনায় গত বুধবার (০৫ আগস্ট) কক্সবাজারের টেকনাফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ’র আদালতে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ ও মো. লিয়াকতসহ নয়জনকে অভিযুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে টেকনাফ থানার ওসিকে এফআইআর হিসেবে রুজু এবং র‌্যাবকে তদন্তের নির্দেশ দেন। বর্তমানে মামলাটি র‌্যাবের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।

ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ সাতজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন—এসআই নন্দলাল রক্ষিত, এসআই টুটুল, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও কনস্টেবল মো. মোস্তফা।

সিনহা রাশেদের বাড়ি যশোরের বীর হেমায়েত সড়কে। তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ খান অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন। ৫১ বিএমএ লং কোর্সের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করেছিলেন সিনহা রাশেদ। ২০১৮ সালে সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে তিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেও (এসএসএফ) তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

Scroll to Top