আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আশা প্রকাশ করে বলেন যে, সবাই সচেতন হলে করোনার এ গহীন আঁধার নিশ্চয়ই কেটে যাবে । তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অসহায় মানুষের পাশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করুন। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপনাদের আশার বাতিঘর। তিনি সবার পাশে আছেন। আসুন আমরা তার হাতকে শক্তিশালী করি। সমন্বয়ের মাধ্যমে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি। সবাই সচেতন হলে করোনার এ গহীন আঁধার নিশ্চয়ই কেটে যাবে।”
শুক্রবার সকালে সংসদ ভবন এলাকায় সরকারি বাসভবন থেকে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোগ ও চিকিৎসা সহায়তা নিয়ে অনলাইন প্রশিক্ষণে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি। এসময় তিনি হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি রোধে হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট আসছে। আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার অনুরোধ করছি এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
গণপরিবহন চালুতে স্বাস্থ্যবিধি না মানা সংশ্লিষ্টদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের শামিল বলেও দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। তিনি বলেন, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে জনগণ সমালোচনামুখর। এমন অবস্থায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অর্ধেক আসনের বেশি যাত্রী উঠানো সংশ্লিষ্টদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের শামিল। করোনাভাইরাসের মহামারিতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, করোনা মহামারী একটি বৈশ্বিক সংকট। পৃথিবীর ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্ত ও সংক্রমণ বিস্তারের দিক থেকে গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের অবস্থান ২১ তম স্থানে।দেশে এ সংক্রমণের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন উন্নত বিশ্বের দেশগুলো অর্থনীতির শক্ত ভিত এবং স্বাস্থ্য খাতের সক্ষমতা নিয়েও কি অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে এ মহামারির কাছে। একটি রোগ যখন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে তখন বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। তখন প্রয়োজন পড়ে বিশেষ ব্যবস্থাপনা, সমাজের সকল স্তরের মানুষের ঐক্য ও সচেতনতা, সকলের সম্মিলিত ও সমন্বিত প্রয়াস। মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার সংকটের শুরু থেকে অত্যন্ত দক্ষতা ও সমন্বয়ের সাথে নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও করোনার সংক্রমণ রোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে নিরলস কাজ করছে। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অসহায়, কর্মহীন মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে নানা রকম সহযোগিতা করে আসছে।
“সরকার ট্রেনিং ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, সুরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহ, নতুন করে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ, ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধাদের পারিবারিক ও পেশাগত সুরক্ষার পাশাপাশি উপজেলা পর্যন্ত চিকিৎসা নেটওয়ার্কে সমন্বয় গড়ে তুলেছে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। প্রায় ৩ হাজার টেকনোলজিস্ট নিয়োগের উদ্যোগের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ কমপ্লেক্স স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছেন। অর্থনীতির সুরক্ষায় ঘোষণা করেছেন এক লাখ কোটি টাকার বেশি প্রণোদনা প্যাকেজ।”
বাংলাদেশ আওমীলীগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির উদ্যোগে কোন সংক্রমণ রোগ ও চিকিৎসা সহায়তা বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে অনলাইন প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ছয়টি পদক্ষেপে নিয়ে ট্রেনিং দিচ্ছে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটি। এই ট্রেনিংয়ের প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকেরে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত রয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক হোসেন মনসুর, সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর সহ উপ কমিটির সদস্যগণ এবং প্রশিক্ষণার্থী গণ সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
“এ বাস্তবতায় সংক্রমণ রোধে সচেতনতা তৈরি এবং আক্রান্ত হলে প্যানিক না হয় চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কিভাবে করা যায়তা নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কমিটির স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলে মনে করি। আমি উদ্যোগ পর্যায়ক্রমে বিভাগ থেকে জেলা হয়ে উপজেলা পর্যন্ত ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানাই। এ প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান আপনারা অনলাইনে প্রচার বা ডিসক্রিমিনেশন এর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দিন। প্রযুক্তির সহায়তায় পৌঁছে যান প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে।”