প্রাণঘাতীকরোনার টিকা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেখছেন টিকা বিজ্ঞানীরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট ১৩৫টি ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলায় বাড়ছে আশা। টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে দেশে তা সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে আইসিডিডিআরবি ট্রায়ালে থাকা দেশগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলেও জানান টিকা বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর অতীত অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি। তবে বাংলাদেশে কোন ভ্যাকসিন অধিক কার্যকরী হবে সেটি বুঝতে মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে সেটি বিশ্লেষণ করা জরুরি।
করোনার কার্যকর টিকার জন্য মুখিয়ে আছে থমকে যাওয়া পৃথিবীর প্রতিটি নাগরিক। তাইতো এই প্রথমবার বিশ্বের বড় বড় দাতা সংস্থার পাশাপাশি উন্নত দেশগুলোও এগিয়ে এসেছে একে অপরকে সহযোগিতার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশের মোট ৮টি ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই ট্রায়ালের আওতায় এসেছে এবং ট্রায়ালের উপযোগী হয়েছে আরো ৭টি ভ্যাকসিন। ট্রায়ালে আসা ভ্যাকসিনগুলোর কোনো কোনোটি দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত বেশি সংখ্যক মানুষের ওপর পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এর পরের ধাপ তথা তৃতীয় ধাপে কয়েকটি দেশের মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে এর কার্যকারিতা দেখা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ সহায়তার ও অনেকগুলো দেশ একসঙ্গে এগিয়ে আসায় দ্রুততম সময়ে টিকা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কলেরা টাইফয়েড টিকার গবেষণার সঙ্গে জড়িত দেশের শীর্ষ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী কাদরী।
অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, এই ৮টা ভ্যাকসিনের মধ্যেই যদি কোনো একটা অগ্রসর বেশি হয়, ফলাফল ভালো থাকে সেই ভ্যাকসিন আগে চলে আসতে পারে। আশা করা হচ্ছে ডিসেম্বর নাগাদ একটা ভ্যাকসিন আসতে পারে।
মূল ভ্যাকসিনের উপাদান ও প্রযুক্তি থেকে স্বল্প সময়ে বিপুল সংখ্যক ভ্যাকসিন ডোজ তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। ফলে টিকা আবিষ্কার হলে তা প্রথমদিকেই বাংলাদেশ হাতে পাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানী ও টিকা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী কাদরী।
তিনি বলেন, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান এগুলোতে আমাদের থেকে ভ্যাকসিন দেরিতে আসে। একটা ভ্যাকসিন তৈরির পর পূর্ণতা পেতে সময় লাগে। তবে কোভিডের ক্ষেত্রে দেশে মানুষের শরীরে কি ধরনের এন্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে সেটি এখন থেকেই যাচাই করা জরুরি বলে মনে করছেন তিনি।
অধ্যাপক ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, কি ধরনের এন্টিবডি তৈরি আছে, কোন কোষের সাথে জড়িত সেটা আমার জানা দরকার। এটা না জানলে ভ্যাকসিন কার্যকরী হবে কিনা তা বুঝতে পারবো না।
বিশ্বের সব দেশ সমান ঝুঁকিতে থাকায় টিকা আবিষ্কারের অংশীদার হতে আগ্রহী সবাই। পুরো বিশ্ব এক হবার এই নজির দ্রুততম সময়ে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলেও মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।