দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণে আরো ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ২৭৩ জন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩২৮ জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৬৮ জন।
আজ রবিবার (১৭ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁদের ১৩ পুরুষ এবং একজন নারী। বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩২৮ জনের।
জানানো হয়, নতুন যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিভাগের ৯ জন এবং চট্টগ্রাম বিভাগে পাঁচজন। এঁদের ১৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন হাসপাতালগুলোতে এবং একজন বাসায়। মৃত্যুবরণকারীরা ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা সিটিতে পাঁচজন এবং চট্টগ্রামের মধ্যে চারজন। ঢাকা বিভাগে যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের মধ্যে ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও সাভারের একজন করে, কুমিল্লার একজন, নারায়ণগঞ্জের একজন এবং শরীয়তপুরের একজন।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৫৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৩৭৩ জন।
ডা. নাসিমা জানান, করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষার জন্য নতুন করে যুক্ত হয়েছে সাভারে অবস্থিত এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ফলে এখন ঢাকাসহ সারা দেশে ল্যাবের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২টিতে। এই ৪২টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে আট হাজার ৫৭৪টি। আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে আট হাজার ১১৪টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এক হাজার ২৭৩ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৬৮ জন। আর এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার ৪০৮টি।
আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ২৭৬ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৪ জন। বর্তমানে আইসোলেনশনে আছেন তিন হাজার ২৪৮ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৬০৪ জন।
বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরীতে ২০০টি আইসোলেশন শয্যা বেড়েছে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীতে তিন হাজার ১০০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৩৪টিতে। এ নিয়ে বর্তমানে সারা দেশে আইসোলেশন সংখ্যা ৯ হাজার ১৩৪টি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫০০টি ও ময়মনসিংহ নার্সিং ডরমিটরিতে আরো ২০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুতির কাজ চলছে।
কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন তিন হাজার ৬৩৪ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৩৫৮ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট দুই লাখ ৪০ হাজার ৫৪৮ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৯১ হাজার ১৩১ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৯ হাজার ৪১৭ জন।
সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৬১৭টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে সেবা প্রদান যায় বলে জানানো হয় বুলেটিনে।
বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর\’র হটলাইনে কল এসেছে দুই লাখ ২৭ হাজার ৭৯৩টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৫৮ লাখ ১২ হাজার ৪৭৩ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো ১২৯ জন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৯২২ জনে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে ৫৪ জন। এ নিয়ে বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ১৫৭ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানানো হয় বুলেটিনে।