করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে বিরাজ করছে অস্থিতিশীল পরিবেশ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ২৫ টাকা কেজি দরে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। আজ শনিবার (৯ মে) সকাল থেকে চলছে প্রতিষ্ঠানটির এই বিক্রি কার্যক্রম।
আগে ৩৫ টাকা কেজিতে আমদানি করা বড় আকারের পেঁয়াজ বিক্রি করলেও এখন নতুন দামে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। শুধু দামই কমেনি। পেঁয়াজের মানেও উন্নয়ন হয়েছে। এতে ক্রেতাদের চাহিদাও বেড়েছে। বাজার মূল্যের চেয়ে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা কম হওয়ায় ডিলাররাও বিক্রি বেশি হওয়ার আশা করছেন।
ডিলাররা জানান, আমদানি করা পেঁয়াজ মানুষ নিতে চায় না। ফলে দিন শেষে অনেক পেঁয়াজ থেকে যেত। আজ বিক্রির শুরু থেকেই পেঁয়াজের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন ক্রেতারা। এছাড়া ছোলার চাহিদাও কমে গেছে বলে জানিয়েছেন ট্রাকের বিক্রেতারা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৭ মে) রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার অংশ হিসেবে শনিবার (আজ) থেকে সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান টিসিবির মাধ্যমে ২৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসা বাণিজ্য বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রমজানে যাতে কোনো অবস্থাতে সমস্যা না হয় এজন্য প্রতিবছর যা স্টকে রাখতে হয় তার দশগুণ স্টকে রাখা হয়েছিল। যার জন্য আমরা করোনা পরিস্থিতিতেও ভালো অবস্থায় রয়েছি, টিসিবি ৫০০ স্পটে ট্রাকে ও বিভিন্ন ডিলারের মাধ্যমে সরবরাহ করে চলছে।
আজ শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলকায় ঘুরে দেখা গেছে, টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের ভিড় রোজা শুরুর মতো না হলেও চোখে পড়ার মতো। যেসব এলকায় সকালেই ট্রাক ভিড়েছে সেখানে প্রথম দিকে একটু ভিড় কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের সারিও দীর্ঘ হতে থাকে।
টঙ্গীবাজারের কাছে ট্রাক ভেড়ে বেলা সাড়ে ১১টায়। তার পরই লাইনে দাঁড়িয়ে যায় মানুষ। তবে অনেকে দেশি পেঁয়াজের খবর জানেন বলেই ক্রেতারা জানিয়েছেন। এখানে কথা হয়, টিসিবির ডিলার ও মাহিরা ট্রেডার্সের মালিক মো. সেলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, \’প্রতিদিন আমাদের ৩০০ কেজি পেঁয়াজ দেওয়া হতো। আজ ২০০ কেজি দিয়েছে। অন্যদিন সব পেঁয়াজ বিক্রি হতো না। কিন্তু আজ যেহেতু দেশি পেঁয়াজ, তাই আশা করছি পেঁয়াজ থাকবে না।\’ একজন ক্রেতা এক কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন বলে জানান তিনি।
পেঁয়াজ ছাড়াও ১২০ টাকা কেজি খেজুর, ৮০ টাকা লিটার সয়াবিন তেল, ৫০ টাকা কেজি চিনি, ৫০ টাকা কেজি মশুর ডাল ও ৬০ টাকা কেজি ছোলা বিক্রি করছে টিসিবি।
বিক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, অন্যান্য পণ্যের চাহিদা থাকলেও ছোলার চাহিদা একেবারেই কমে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ডিলার বলেন, ছোলা বিক্রি করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বিক্রেতারা অনেক সময় অনুরোধ করে, অনেক সময় অন্যপণ্যের সঙ্গে প্যাকেজ করে তার পর ছোলা বিক্রি করছে।
রাজধানীর ধলপুর, মুগদা-বাসাবোসহ আরো বিভিন্ন এলাকায়ও টিসিবির পণ্য কিনতে ভিড় দেখা যায়। কম দামে দেশি পেঁয়াজ পেয়ে ক্রেতারা খুশি বলেই জানান।
বাসাবো ট্রাক থেকে পণ্য কিনে ফেরার পথে আজ শনিবার দুপুরে কথা হয় আব্দুল করিম নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, \’আমি গত সপ্তাহে একবার এসেছিলাম। আর আজ আসলাম। বাজার থেকে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় দেশি পেঁয়াজ কিনতে হয়। এখানে ২৫ টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আর দেশি হওয়ায় মানও ভালো।\’