বাংলাদেশে চাল, গম ও ভুট্টার উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়বে

প্রাণঘাতী করোনায় বিপর্যস্তে গোটা বিশ্ব। বিশ্বজুড়ে বৈরী আবহাওয়া ও নানা সংকটের কারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শস্য চাল, গম ও ভুট্টার উৎপাদন কমছে। এই করোনাকালে বাড়তি খাদ্য কতটুকু আমদানি করা যাবে, তা নিয়েও এসব দেশে জটিলতা বাড়ছে। কিন্তু ঠিক তার উল্টো চিত্র বাংলাদেশে। অনুকূল আবহাওয়া ও উপকরণ সহজলভ্য থাকায় এবার বাংলাদেশে ওই তিন খাদ্যশস্যের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ বাড়বে। শুধু এই তিন শস্যের মোট উৎপাদন বাড়তে পারে প্রায় ১০ লাখ টন। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ থেকে প্রকাশ করা বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও খাদ্য উৎপাদন কেমন হতে পারে, সে–বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

ইউএসডিএ থেকে গত সোমবার প্রকাশিত বৈশ্বিক খাদ্যশস্য প্রতিবেদন–২০২০, মে শীর্ষক আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে বিশ্বজুড়ে চালের উৎপাদন দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল উৎপাদনকারী দেশ চীনের উৎপাদন ১ দশমিক ১৯ শতাংশ কমেছে। বিশ্বের অন্যতম চাল রপ্তানিকারক দেশ থাইল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ, মিয়ানমারে প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদনকমেছে। ভারত ও ভিয়েতনামে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি চালের উৎপাদন বেড়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে, প্রায় ৩ শতাংশ।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সাত্তার মন্ডল বলেন, ‘ফসলের উৎপাদন এবার বাড়বে আমরা ধারণা করেছিলাম। তবে তার সাফল্যের খবরের উদ্‌যাপনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এসব খাদ্যশস্য যাতে ঠিকমতো মাঠ থেকে তোলা যায়, সেই প্রস্তুতিও নিতে হবে।’

তবে ইউএসডিএর ওই প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে উৎপাদন ভালো হলেও কৃষিতে করোনাভাইরাসের কারণে কিছু বিপদও বাড়বে। যেমন বর্তমানে মাঠে বোরো ধান কাটা চলছে। সামনে ভুট্টা ও গম আসবে। এ ছাড়া অন্যান্য শাকসবজিও চাষ হয়েছে। এগুলো কাটা ও সংগ্রহের জন্য কৃষিমজুরের সংকট দেখা দেবে। সাধারণ ছুটির কারণে দেশের ভাসমান কৃষিমজুরেরা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারছেন না। ফলে তাঁরা যেমন একদিকে কর্মসংস্থানের সংকটে পড়েছেন, অন্যদিকে এসব ফসল কেটে ঘরে তোলা নিয়েও বিপদ তৈরি হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল হাওরের বোরো ধান কাটা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষিশ্রমিক পাঠিয়েছি আমরা। একই সঙ্গে ধান কাটার যন্ত্রসহ কৃষিযন্ত্র কেনায় কৃষকদের আমরা ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছি। এতে বন্যা আসার আগেই আমরা হাওরের বেশির ভাগ ধান কেটে ফেলেছি। দেশের অন্যান্য স্থানেও একইভাবে ধান, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল আমরা কেটে ফেলব।’
: প্রথম আলো

Scroll to Top