সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেসব কারখানায় কাজ আছে সেসব কারখানা কয়েকটি ধাপে সেগুলো চালু হচ্ছে। প্রথম ধাপে ঢাকার মধ্যে কয়েকটি কারখানা রোববার (২৬ এপ্রিল) থেকে চালু হচ্ছে। যেগুলো ঢাকায় অবস্থানরত শ্রমিক দিয়েই এসব কারখানা চালানো যাবে।
এরপর একে একে চালু করা হবে আশুলিয়া, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এবং এর আশপাশের কারখানা আর সব শেষে চালু হবে টঙ্গি ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের কারখানাগুলো।
তবে হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে, শ্রমিক ডেকে কারখানা চালু করা সিদ্ধান্ত আত্মঘাতির শামিল বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করানোর আগে কোয়ারেন্টিনে রাখার পরামর্শও দেন তারা।
অন্যদিকে এই মুহুর্তে কারখানা চালুর পক্ষে না শ্রমিক নেতারা। তাদের দাবি পরিস্থিতি স্বাভাবিক আর পরিবহন ব্যবস্থা চালু হলে কারখানা খোলা যেতে পারে। তবে সেটি করতে হবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে।
বিজেএমইএ সূত্রে জানা গেছে, যেসব কারখানায় কাজ আছে সেসব কারখানা কয়েকটি ধাপে চালু করা হবে। প্রথমধাপে আগামীকাল রোববার (২৬ এপ্রিল) ঢাকার আটটি কারখানা খোলা হবে, যেগুলোর শ্রকিকরা ঢাকাতে অবস্থান করছে। তাদের দিয়ে এসব কারখানা চালানো যাবে। এছাড়া মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) খোলা হবে আশুলিয়া থেকে মানিকগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত কারখানাসমূহ। আর আগামী রোববার (৩০ এপ্রিল) থেকে চালু হবে নারায়ণগঞ্জসহ কাচপুর, রূপগঞ্জ এলাকার কারখানা। এছাড়া আগামী ২, ৩, ৪ মে টঙ্গী এবং ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু হবে।
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনেরর সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে কারখানা চালুর পক্ষে আমি না। এখনও পরিবেশ ভালো হয়নি, গণ পরিবহন বন্ধ কীভাবে, কোন যুক্তিতে শ্রমিকদের কাজে যেতে বলা হয়েছে? তিনি বলেন, গ্রাম থেকে ঢাকা এনে কারখানা চালু করা মানে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেওয়া। এতে করোনা ঝুঁকি বাড়বে।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, আরএমজিসহ অর্থনৈতিক সব কিছু খোলা যেতে পারে, তবে সেটা নিয়মের মধ্যে। যেহেতু এখন পরিবহন বন্ধ আছে এক্ষেত্রে নিজস্ব পরিবহণে শ্রমিকদের গ্রাম থেকে ঢাকা আনতে হবে। তাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে রেখে সুস্থতা নিশ্চিত করে কাজে যোগদান করতে হবে।
তিনি বলেন, একবার তাদের ঢাকায় আনানো হচ্ছে আবার গ্রামে যাবে আবার ঢাকায় আসার জন্য বলা হবে। শ্রমিকরা পিকআপে গাদাগাদি করে এসে কারখানায় যোগদান করবে এতে বিপদ বাড়বে। গাদাগাদি করে আসা মানে সংক্রমণ বাড়াতে উৎস হিসেবে কাজ করবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে লকডাউনের মতো অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে। এখন আমরা কয়েকটি ধাপে কারখানা চালু করবো। শুরুতে রোববার (২৬ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় চালু হবে, এখানকার শ্রমিকরা ঢাকাতে আছেন। কমলাপুর, শাহজাহানপুর, বাড্ডা ইত্যাদি এলাকার কারখানা চালু হচ্ছে। পরে আশুলিয়া-মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ-কাঁচপুর, টঙ্গি-ময়মনসিংহ এলাকায় চালু হবে।
তিনি বলেন, কোনো শ্রমিক এই মুহুর্তে গ্রামে অবস্থান করলে সে সেখানে থাকবে। তার বেতন বিকাশের মাধ্যমে পেয়ে যাবেন পরে এসে তিনি আবার জয়েন করবেন, চাকরি চলে যাবে না। আমরা কারখানা চালু করবো যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে।