করোনা ঝুঁকিতে সাধারণ ছুটির সময় দায়িত্ব পালনকারী ব্যাংকাররাও বীমা সুবিধার আওতায় এলো। যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যাংকে সশরীরে ব্যাংকিং কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তারা কারোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে পদমর্যাদা ভেদে পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকা স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা পাবেন। মারা গেলে অর্থের পরিমাণ পাঁচ গুণ বাড়িয়ে অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে।
গত ৭ এপ্রিল দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকদেরও সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের বিশেষ স্বাস্থ্যবীমার ঘোষণা দিয়েছেন প্রদানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কনফারেন্সে শেখ হাসিনা বলেন, পদমর্যাদা অনুযায়ী পাঁচ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা হবে। দায়িত্ব পালনকালে কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তার সার্বিক চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ইন্সুরেন্স পাঁচ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
বুধবার (১৫ এপ্রিল) এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, ব্যাংকিং দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন ব্যাংকিং খাতকে সচল রাখতে যারা তাদের জীবন ও পরিবারকে ঝুঁকিতে রেখে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তাদের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশেষ স্বাস্থ্য বীমা সুবিধা ও বিশেষ অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে।
সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিকালীন যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারী ব্যাংকে সশরীরে ব্যাংকিং কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন বা করছেন তারা কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হলে পদমর্যাদা ভেদে সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা স্বাস্থ্য বীমা হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক প্রদেয় হবে যা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজেরাই পদভিত্তিক প্রাপ্যতা নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
ন্যূনতম যৌক্তিক সময়ের মধ্যে (আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে) উক্ত অর্থ দেওয়া হবে এবং তার সার্বিক চিকিৎসার ব্যয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক বহন করতে হবে। সাধারণ ছুটির সময় দায়িত্ব পালনের কারণে কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনো ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ঘটলে বিশেষ স্বাস্থ্য বীমার জন্য নির্ধারিত অঙ্কে পাঁচ গুণ বিশেষ অনুদান হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে তার পরিবারকে দেওয়া হবে।
এক্ষেত্রে ব্যাংকে তার অন্য কোনো দায়-দেনার সঙ্গে এ বিশেষ অনুদান সমন্বয় করা যাবে না।
উল্লেখ্য, ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় দেওয়া অন্যান্য ভাতাদি ও সুযোগ-সুবিধা যথানিয়মে দেওয়া হবে। সাধারণ ছুটিকালীন কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ব্যাংকে দায়িত্বপালনকালে অন্য যে কোনো দুর্ঘটনার শিকার হলে তার চিকিৎসার প্রকৃত ব্যয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বহন করবে। এ নির্দেশনা সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির তারিখ থেকে কার্যকর হবে ও সাধারণ ছুটি সমাপ্তির পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও এ বিশেষ স্বাস্থ্য বীমা কার্যকর থাকবে। তবে, উক্ত মেয়াদকালে কোভিড-১৯ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কোনো কর্মকর্তা/ কর্মচারীর অনাকাঙ্খিত মৃত্যু ঘটলে তার পরিবার অনুচ্ছেদ ৩ (গ) অনুযায়ী বিশেষ অনুদান প্রাপ্য হবে।