নিম্ন আয়ের দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের খাদ্য সরবরাহের পাশাপাশি সরকার এখন শিশু খাদ্য নিয়ে ভাবছে। কারন চলমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক শিশু রয়েছে যারা খাবার পাচ্ছে না। কোনোভাবেই যেন কোনো শিশু খাবার থেকে বঞ্চিত না হয় সে দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এরকম পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের তালিকা তৈরি করে শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হবে।
শিশু খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বরাদ্দ চেয়ে রোববার (৫ এপ্রিল) চিঠি দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়কে। সেখান থেকে ছাড়পত্রও পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই বরাদ্দ পাওয়ার প্রেক্ষিতে সারাদেশে দরিদ্র পরিবারগুলোর সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে।
এদিকে, সরকার আজ সোমবার ৬৪ জেলায় নগদ আরও ৩০ কোটি টাকা ও এক লাখ মেট্টিক টন বরাদ্দ দেবে। যা দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বন্টন করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সারাদেশে পর্যপ্ত খাদ্য সামগ্রী ও নগদ টাকা সরবরাহ করা হয়েছে। এগুলো জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা দরিদ্র, দিনমজুর এবং কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এরকম জনগোষ্ঠীর তালিকা করে তাদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।
এখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জোর দিচ্ছে শিশু খাদ্যের সরবরাহের উপর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিপুল সংখ্যক শিশু রয়েছে যারা খাবার পাচ্ছে না। এরকম পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের তালিকা তৈরি করে শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হবে। কোনোভাবেই যেন কোনো শিশু খাবার থেকে বঞ্চিত না হয় সে দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে মন্ত্রণালয়।
রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, দেশের কোথাও খাদ্যের সংকট হবে না। আমরা প্রত্যেক জেলা প্রশাসকের (ডিসি) চাহিদা অনুযায়ী সব জেলায় নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করছি।
তিনি বলেন, এখন আমরা শিশু খাদ্যের বিষযটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি। আমাদের কাছে শিশু খাদ্যের জন্য ২০ কোটি টাকার তহবিল আছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া এই টাকা আমরা খরচ করতে পারি না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা রবিবার শিশু খাদ্যের জন্য বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সঙ্গে সঙ্গেই অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কিভাবে শিশু খাদ্য তালিকা ধরে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়া যায় সেদিকে বিশেষ নজর দিচ্ছি।
ডা.এনামুর রহমান জানান, আমরা একটা বিষয় চিন্তা করেছি। আমরা যেহেতু শিশু খাদ্য হিসেবে দুধ সরবরাহ করবো সেক্ষেত্রে মিল্ক ভিটা থেকে আমরা ওই দুধ কিনে নেব। ইতোমধ্যে আমরা তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। যেহেতু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মিল্ক ভিটার উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, এই অবস্থায় আমরা যদি শিশু খাদ্য হিসেবে মিল্ক ভিটা থেকে দুধ কিনে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেই তাহলে মিল্ক ভিটাও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পাবে।
ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিম্ন আয়ের মানুষ, দরিদ্র জনগোষ্ঠী, কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের তালিকা করে যেভাবে আমরা খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়ার চেষ্টা করছি, একইভাবে শিশু খাদ্য বিতরণের ক্ষেত্রেও যাদের প্রয়োজন তাদের তালিকা করে খাবার সরবরাহ করা হবে।
এদিকে, ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জেলায় জেলায় নিয়মিত ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ টাকা পাঠানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের চাহিদা অনুযায়ী সপ্তাহের প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে।