করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়ে অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) থেকেই মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। সব মিলিয়ে দেশে একরকম শুরু হচ্ছে লকডাউন (অবরুদ্ধ) অবস্থা।
এতে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে শহর এলাকায় বসবাসরত খেটে খাওয়া দরিদ্র জনগোষ্ঠি। কাজ না পেলে এদের দু’বেলা খাওয়ারও সামর্থ্য নেই। তাই এ শ্রেণির মানুষের কথা চিন্তা করে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে কম দামে ডাল ও ভোজ্যতেল বিক্রির চিন্তাও রয়েছে। প্রাথমিকভাবে দেশের সবগুলো সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় এই কার্যক্রম চালু করবে সরকার। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই কার্যক্রম চালু হবে বলে খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে অঘোষিত লকডাউনের কারণে সবচেয়ে বেশি সংকটে আছে নিম্নআয়ের দরিদ্র ও দিনমজুর মানুষেরা। এই অবস্থায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কোন মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে সে লক্ষ্যে সরকার ওএমএস চালুর এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে খাদ্য অধিদপ্তরকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। জানা গেছে, উপরের নির্দেশনা পাওয়ার প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছে চাল পৌঁছানোর কর্মকৌশল ঠিক করছে খাদ্য অধিদপ্তর। এরই অংশ হিসেবে সীমিত সময়ের জন্য হলেও শহরের দরিদ্র লোকদের ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, নিম্ন আয় মানুষের জন্য ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করেন। নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও নভেম্বর এই পাঁচ মাস ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারের কাছে ১০ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৩০ কেজি চাল বিক্রি করা হয়। বর্তমানে এই খোলাবাজার ব্যবস্থায় প্রতি কেজি ৩০ টাকা দামে চাল বিক্রয় করা হয়। এই পরিমাণ চাল কিনতে সরকারের খরচ পড়ে ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ বর্তমানে কেজিপ্রতি সাড়ে ১৩ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১০ টাকা দরে এ চাল বিক্রি করতে গেলে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি আরও বাড়বে।