করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিসে টানা ১০ দিনের ছুটি চলছে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় এই ছুটির মেয়াদ আরও কিছুদিন বাড়তে পারে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। তবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী সায় দিলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন তা জানাবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আজ সোমবার গণমাধ্যমকে এমন আভাস দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব জানান, ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় ছুটি হয়তো বাড়তে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো আমরা জানি না।’
সরকারি সূত্রগুলো বলছে, প্রথমে আরও সাত দিন এই ছুটি বাড়তে পারে। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
এর আগে ২৩ মার্চ সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে। এর মধ্যে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং পরের দুদিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। গতকাল (২৯ মার্চ) থেকে ২ এপ্রিল পাঁচ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। আর ৩ ও ৪ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় মোট ১০ দিনের ছুটিতে চলমান রয়েছে সারা দেশ।
৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজন। এরপর করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার এ মাসে বেশ কিছু নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছুটির পাশাপাশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা আরও বাড়তে পারে। ১ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠেয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের চলমান ছুটি বৃদ্ধি করা হতে পারে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রমজান মাসে এমনিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকে। পরিস্থিতি বিবেচনায় রজমানের ছুটির বিষয়ে ভিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত না হলে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকবে।
চলমান করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে কয়েকটি ধাপে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী বর্তমান পরিস্থিতির ভয়াভয়তা বেড়ে যাচ্ছে। ঘরের বাইরে বের হওয়াটা আরও ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলে তাদের নিরাপত্তায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ রাখার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। বর্তমান ছুটি শেষ হওয়ার আগেই আগামী রমজান ও ঈদের ছুটি পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ‘সামগ্রিক বিষয় বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সবার আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে। প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হতে পারে।’