দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এর আগে শুক্রবার দুজন চিকিৎসকসহ চার ব্যক্তি প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে দেশের সবশেষ পরিস্থিতি জানাতে শনিবার দুপুরে অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে আসেন সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তখন তিনি এসব তথ্য দেন।
তিনি বলেন, আমরা এখন কেউ ঘরের বাইরে যাব না, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা পদ্ধতি প্রসারিত করা হয়েছে। কাজেই সবাইকে সেখানকার হটলাইনে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি সমন্বিত কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে মোট আটটি। আইইডিসিআরের হটলাইনগুলো সবসময় খোলা রয়েছে। তিনি ধৈর্য ধরে সবাইকে সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানান। এছাড়া আক্রান্তের মধ্যে আরও চারজন সুস্থ হয়েছেন। সবমিলিয়ে মোট ১৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হলেন।
এ সময় তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আমরা আইইডিসিআরের হটলাইনে তিন হাজার ৪৫০টি কল পেয়েছি। সবগুলোই ছিল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত।
এর আগে শুক্রবার (২৭ মার্চ) আইইডিসিআর জানিয়েছিল, দেশে ৪৮ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ১১ জন এবং চিকিৎসাধীন ৩২ জন।
করোনায় সতকর্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক সেব্রিনা বলেন, আমাদের সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের আজকের দ্বিতীয় দিন চলছে। এ পর্যন্তু আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের আদেশ-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে জনস্বার্থে যে আদেশ ও নির্দেশনা দেয়া হয়, সেগুলো আপনারা অবশ্যই মেনে চলবেন। জনগণের ভালোর জন্য, জনগণের সুস্থতা-স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে সরকারি পদক্ষেপগুলো নিয়েছি।
‘অবশ্যই ঘরের বাইরে যাবেন না, ঘরের ভেতরে থাকবেন। ঘরের ভেতরে থেকে যে বিষয়গুলো চর্চা ও পরিচর্যা করতে বলে থাকি, সেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’
তিনি জানান, ইতিমধ্যে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন। কাশি শিষ্টাচার অবশ্যই মেনে চলবেন। নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন। অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করবেন না। যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব কিংবা যাদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তারা অবশ্যই অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করে নিজের ঘরের ভেতরেই থাকবেন। একদম নিজের ঘর থেকে বের হবেন না।
অন্যদিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬ লাখ। এর মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ২৭ হাজার। সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৩১ হাজার মানুষ।