প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী। কাজেই আমি চাই, প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে নিজের দেশকে গড়ে তুলবেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথা নত করে নয়। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে, সম্মানের সঙ্গে চলবে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা এগিয়ে যাব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেভাবেই আমরা দেশকে গড়তে চাই।’
‘অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিশ্বের পাঁচটি দেশের একটি এখন বাংলাদেশ’—এই কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ তার উন্নয়ন বাজেটের শতকরা ৯০ শতাংশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে।’
দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে সমুন্নত রাখতে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ‘সর্বোচ্চ আন্তরিকতা’ ও ‘নিষ্ঠা’র সঙ্গে ‘সর্বোচ্চ দায়িত্ববোধ’ ও ‘শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্মপ্রচেষ্টা’র মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করে যাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সর্বাবস্থায় চেইন অব কমান্ড মেনে ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে দেশ গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অব্যাহত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যদি শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে তাহলে অগ্রগতি অবশ্যম্ভাবী, এটা হতেই হবে। তাই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে তা অব্যাহত থাকবে।’ ‘দেশের মানুষ যেন শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস করতে পারে, সে ব্যবস্থাই আমরা করতে চাই,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনীকে ‘দেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক’ আখ্যায়িত করে এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং জনকল্যাণে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি এ সময় সাম্প্রতিক কালের ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর সাফল্যেরও উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আবু মোজাফ্ফর মহিউদ্দিন মোহাম্মাদ আওরঙ্গজেব চৌধুরী এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত ভাষণদানরত প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে সম্প্রসারিত এবং পুনর্নির্মিত সেনাকুঞ্জের বর্ধিতাংশেরও উদ্বোধন করেন।