বিএনপির প্রয়াত নেতা ও ঢাকার সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের অন্যতম অভিভাবক উল্লেখ করে দেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করে দিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাদেক হোসেন খোকার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অনুষ্ঠানে ইশরাক হোসেন এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে কিছু বলতে চাই। বাংলাদেশে প্রতিহিংসার যে রাজনীতি চর্চা, তার ভুক্তভোগী আমার বাবা, আমার পরিবার। বাবার সঙ্গে গত পাঁচ বছর কাটিয়েছি। অনেক কিছু শিখেছি। তিনি বলতেন, মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। এখানে আজকে যে হানাহানির রাজনীতি চলছে, এর জন্য বাবা মুক্তিযুদ্ধ করেননি। রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকবে, বহু রাজনৈতিক দল থাকবে, আমাদের লড়াই হবে ভোটের মাধ্যমে।’
ইশরাক বলেন, ‘আজকে যে পর্যায়ে পৌঁছেছি, বিএনপির যাঁরা আহত, নিহত ও অত্যাচারের শিকার হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, এই রাজনীতির চর্চা কত দিন চলবে? বাংলাদেশে দুজন অভিভাবক আছেন একজন খালেদা জিয়া, যিনি জেলে আছেন। আরেকজন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ কোথায়? আপানারা এর সমাধান করে দেন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে ইশরাক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিনের যে বাধাগুলো আছে, সেগুলো দূর করেন। আশপাশের স্বার্থবাদীদের বাদ দিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করে দিয়ে যান। আমরা যারা নতুন প্রজন্ম, তারা চাই না আর কোনো বিএনপি পরিবার এই প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হোক এবং অন্য কোনো দল যদি ক্ষমতায় আসে, তখন আওয়ামী লীগের কোনো পরিবার প্রতিহিংসার হোক। আমাদের অভিভাবক যাঁরা আছেন, তাঁদের এর সমাধান করে দিয়ে যেতে হবে। অন্য কারও দিয়ে এটা হবে না।’ তাঁর বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাবার জন্য তিনি সবার কাছে দোয়া চান।
আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ ঢাকায় পৌঁছে। এরপর বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার পরে দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মরদেহ রাখা হয়।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাদেক হোসেন খোকাকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান, গণফোরাম থেকে আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল, মনোবিজ্ঞান বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফকির আলমগীর, জাতীয় হিন্দু মহাজোট, এলডিপি মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ন্যাপ, ডাকসুর সহসভাপতি নুরুল হক নুরু, ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। এ ছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।