রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতকে এগিয়ে আসার আহ্বান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন যে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের ইনানীতে একটি তারকা হোটেলে দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত নবম ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ভারতের সহযোগিতা কামনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার এই বোঝা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বহন করতে পারি না। এই সমস্যা আমাদের একার নয়। এই সমস্যা সমাধানে ভারতসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’

১১ লাখ রোহিঙ্গা চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার অনন্য নজির স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই মানবিকতা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও ভারত এক সঙ্গে কাজ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে স্থান নেই। কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ ভারত বন্ধুত্ব সংলাপ উভয় দেশের সম্পর্কে নব দিগন্তের সূচনা করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বন্ধুত্ব সংলাপ এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মতবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশ পারস্পরিকভাবে লাভবান হতে পারে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর এবং বিশ্বাসের। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যার সূচনা হয়েছিল। দুই দেশের সুদীর্ঘ এই সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীর হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশ-ভারত নবম ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ ফারুক খান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের রাজ্যসভার সদস্য এম জে আকবর, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক ও আশেক উল্লাহ রফিক, ফ্রেন্ডস বাংলাদেশ ইন্ডিয়ান চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. রাধা তমাল গোস্বামী, বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর রিজিওনাল স্টাডিজ এর চেয়ারম্যান এবং ফ্রেন্ডস বাংলাদেশ এর প্রধান সমন্বয়ক আ স ম শামছুল আরেফিন।

‘কক্সবাজার ঘোষণা’র মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এই ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ। ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ-ভারত দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার লক্ষ্যে নানা পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি খাত, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সংকট মোকাবিলায় সমন্বিত পরিকল্পনাসহ সম্ভাবনাময়ী আরও বিভিন্ন খাতের সার্বিক উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এই সংলাপে ভারতের ২৬ জন এবং বাংলাদেশের ৫৪ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।

Scroll to Top