যেসব নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলোর অনুকূলে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি অংশ (এমপিও) দেওয়ার সময় যাচাই করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। যেসব তথ্যের ভিত্তিতে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে, যাচাইয়ে যদি তা ভুল বা অসত্য প্রমাণ হয়, তাহলে ওই সব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর নীলক্ষেতে বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ভবনে এমপিওভুক্তি নিয়ে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
২৩ অক্টোবর স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে দেশের ২ হাজার ৭৩০টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে যাচাই-বাছাই করার পরও নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে কিছু ভুলভ্রান্তি প্রকাশ পাচ্ছে। যা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ হচ্ছে। এসব খবরে বলা হয়, হবিগঞ্জে একটি কলেজ সরকারি হওয়ার পরও এমপিওভুক্ত হয়েছে। পঞ্চগড়ে একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার খবরে রাতারাতি ঘর তোলা হচ্ছে। যশোরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিম্নমাধ্যমিক স্তর (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) আগেই এমপিওভুক্ত ছিল, কিন্তু সেটিকেও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। নরসিংদী সদরে মাত্র ৫০ গজের ভেতরে ভাড়াবাড়িতে পরিচালিত দুটি কলেজ এমপিওভুক্ত হয়েছে। এ ছাড়া পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আবদুর রশিদ তালুকদার ডিগ্রি কলেজ সরকারি করার পরও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবস্থান জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। যশোরের বিদ্যালয়টি ভুলক্রমে আবারও নিম্নমাধ্যমিক স্তরের জন্য আবেদন করেছিল। তবে আগে এমপিওভুক্ত থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যাচাই করে নিলে এটা হতো না। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত, সেগুলো কেন আবার আবেদন করবে এটা তাঁরা চিন্তাও করেননি।
সরকারীকরণ বা জাতীয়করণ হওয়া কলেজও এমপিওভুক্ত হওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কেউ রিপোর্ট না করায় এই বিভ্রান্তি হয়েছে। তবে সরকারীকরণের কারণে স্বাভাবিকভাবেই এই প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির কোনো প্রয়োজন হবে না। ফলে এমপিওভুক্তির আদেশ এই প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্যকর হবে না।
পঞ্চগড়ের একটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হওয়ার খবরে রাতারাতি ঘর তোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রাথমিক প্রতিবেদনে ঠিক পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে আরও যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি বা বিতর্কিত ব্যক্তিদের নামে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দীপু মনি বলেন, এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে কোনো রকম রাজনৈতিক বিবেচনা করা হয়নি। শুধু যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত করা হয়েছে। তবে যুদ্ধাপরাধী বা কুখ্যাত ব্যক্তিদের নামে প্রতিষ্ঠিত চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে চলেছে।
এ সময় আরও বক্তৃতা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. সোহরাব হোসাইন।