না ফেরার দেশে চলে গেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির।
রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগসহ নানান রোগে ভুগছিলেন।
মরহুমের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জেলা শহরের পাইকপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন হুমাযূন কবির।
পরে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তার স্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা সভাপতি ডা. আবু সাঈদ উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তার একমাত্র মেয়ে এলিন কবির দেশে এলে সোমবার দুপুরের পর জানাজা শেষে জেলা শহরের পৈরতলা এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করার কথা রয়েছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে দুবারের সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার স্ত্রী নায়ার কবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র।
এ ছাড়া তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় দৈনিক দিন দর্পণ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। বরেণ্য রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ১৯৫২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পৈরতলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবার নাম বজলুর রহমান ও মাতার নাম উকিলুন্নেচ্ছা। অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ছাত্রজীবনে ১৯৭০ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদে ভিপি ছিলেন।
পরে তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে তিনি সম্মুখযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৭ সালে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কনিষ্ঠতম পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৮৪ সালে তিনি পুনরায় পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
পরে তিনি ১৯৮৮ সালে সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহম্মেদের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়া তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুতে জেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।