আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে চলমান শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেছেন, দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো দেশে, কোনো দলীয় সরকার সরকারি দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করেছে বলে আমাদের জানা নেই।
আজ শনিবার দুপুরে ফেনী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগে আজ প্রথম ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। এ সম্মেলেনে যোগ দিতেই ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা সকালে ফেনী এসে পৌঁছান। ফেনী সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে এ সম্মেলন হবে। সম্মেলনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কাদের মতবিনিময় করেন।
আজ সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের বড় অংশজুড়েই ছিল চলমান শুদ্ধি অভিযান। ওই প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুদ্ধি অভিযান করতে গিয়ে নিজ দলের বিরুদ্ধে যে সৎ সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, ইতিহাসে তা নজিরবিহীন। শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, অপরাধ করলে পার পাওয়া যায় না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দলের ভেতর ও দলের বাইরে যাঁরা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, তাঁরা নজরদারিতে রয়েছেন। অভিযোগ অনেকের বিরুদ্ধে থাকতে পারে, কিন্তু তথ্যপ্রমাণ পেলেই ব্যবস্থা। দুদকের মামলায় কক্সবাজার অঞ্চলের একজন দলীয় সাংসদের দণ্ড হয়েছে। এ অভিযান শুধু ঢাকা নয়, সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, কুতুবদিয়া থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত চলছে। যাঁরা অপরাধ করবেন, তাঁদের কোনো ছাড় নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শাসনামলে হাওয়া ভবন থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতি হয়েছে। অপরাধীদের বিচার হয়নি, তাঁরা পার পেয়ে গেছেন। ঘুষ–দুর্নীতিতে তাঁরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। কানাডার একটি আদালত রায় দিয়েছে বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। কিন্তু বিএনপি সরকার তাদের দলীয় লোকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে, এর একটি উদাহরণও দিতে পারবে না।
কাদেরের এই ব্রিফিংয়ের সময় আওয়ামী লীগের কেন্ত্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, ফেনীর স্থানীয় সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান, পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান, নোয়াখালী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান, ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজি আলাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া শুধু বন্দী নন, তিনি দণ্ডিত। তাঁকে মুক্তি দেওয়া বা বিদেশ পাঠানো আদালতের এখতিয়ার।
কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিএনপি নেতারা ও তাঁর আত্মীয়রা যা বলেন, মেডিকেল বোর্ডের মতামতের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই। তাঁরা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে যতটা না উদ্বিগ্ন, তার চেয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা পুঁজি করে মাঠ গরম করতে চান। তিনি বলেন, বিএনপি বারবার বলে, আইনি লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। মুক্তির জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। কিন্তু দুই বছর হয়ে গেল, বিএনপি দৃশ্যমান কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। তাদের হাঁকডাক আষাঢ়ের তর্জন–গর্জনের মতো অসাড়।