আপনার সন্তানকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে দিন: সজীব ওয়াজেদ

\’আপনার সন্তানকে নিজ পায়ে দাঁড়াতে দিন, তাদের ভুল করতে দিন, কেননা ভুল থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই, তা কখনো ভুলি না\’ এসকল কথা অভিভাবকদের উদ্দেশে করে বলেছেন,প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে আয়োজিত \’ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ\’ আলোচনা অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন তিনি। রাজধানীর রেডিসন হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বর্তমান তরুণদের অভিভাবকদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ২৫ বছর বয়সে কেউ বাচ্চা বা শিশু থাকে না। অথচ আমার দেশে ২৫ বছর বয়সী একজন নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টও খুলতে পারে না। তাহলে ভবিষ্যতে তারা নিজ পায়ে কবে দাঁড়াবে! তাদের চাকরির কথা না বলে নিজ উদ্যোগে কাজ করতে বলুন। তাদের ভুল করতে দিন। কেননা নিজের ভুল থেকে যে শিক্ষা হয়, তা আমরা সহজে ভুলি না।

বাংলাদেশের তরুণদের গ্রহণ করা বেশ কিছু উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আপনি সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা থেকে আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আপনার আয় থেকে আয়কর লাভ করে রাষ্ট্র। আপনার প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের আয় থেকে রাষ্ট্র আয় পাবে। রাষ্ট্র সেই আয় দেশের জনসাধারণের জন্য কাজে লাগাতে পারবে। তাই নিজ উদ্যোগে কাজ করুন। আপনারা নিজেরা কোম্পানি খুলুন।

আজকের অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে সজীব ওয়াজেদ বলেন, শুধু বিসিএসের চিন্তা করা স্বার্থপরের মতো এক চিন্তা। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অফিস। নিজের পরিবার নিয়ে ভালো থাকা। তারপর পেনশন।

এ সময় জয় আরও বলেন, \’এখনকার তরুণেরা দেশের দিকে হাত পেতে থাকে না। আজকের তরুণদের দেখে আমি গর্বিত। তারা সরকারের কাছে হাত পেতে নেই। আমরাই পারি, আমাদের তরুণেরাই পারে। তারা নিজ উদ্যোগে দেশকে এবং দেশের মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।\’

সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তরুণদের কাছ থেকে দেশকে নিয়ে তাদের ভাবনার কথা শোনেন সজীব ওয়াজেদ। অনুষ্ঠানে তরুণদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।

ইয়াং বাংলার বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমাদের তরুণেরা একটু প্রশিক্ষণ পেলেই এগিয়ে যাবে। এখনো বিশ্বে রোবোটিকস, আইওটি, এআই এবং এ ধরনের সেক্টরগুলোর বিশেষ কোষ নেতৃত্ব নেই। আমাদের তরুণেরা সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে এই ক্ষেত্রগুলোতে নেতৃত্ব দেবে।

বর্তমানে কোনো উন্নয়ন কার্যক্রম এককভাবে শহর কেন্দ্রিক নয় জানিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফাইবার অপটিকাল লাইন পৌঁছে দিচ্ছি। এখন পর্যন্ত আড়াই হাজার ইউনিয়নে তা পৌঁছে গেছে। সেই সঙ্গে স্টার্টআপ তৈরি, ইনোভেশন এবং উদ্যোক্তা তৈরির জন্য নেওয়া সরকারি প্রশিক্ষণগুলো কিছুদিনের মধ্যেই সারা দেশ থেকে আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিকে সকল স্কুলে একটি করে ওয়াই ফাই জোন করার বিষয়েও সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ইয়াং বাংলার নেওয়া \’ভিশন ২০২১ ইন্টার্নশিপ\’ সম্পর্কে আলোচনায় তরুণদের দেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আমরা সকল মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ চালু করতে চাই। কিন্তু যে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব সক্রিয়, তারা দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু করেছে। বাকিরা হয়তো শুরু করবে। তবে জেলা পর্যায়ে ডিসি অফিসে ইন্টার্নদের কাজে লাগানোর প্রস্তাবটি খুবই ভালো। আমরা এই প্রস্তাবের নিরিখে কাজ করব।

উপস্থিত সকল তরুণদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ বলেন, আজ ইয়াং বাংলার মাধ্যমে যে উদ্যোগগুলো নেওয়া হচ্ছে তা কিন্তু সরকারি উদ্যোগ নয়। মাথায় রাখবেন, ইয়াং বাংলা সিআরআইয়ের প্রতিষ্ঠান। আর সিআরআই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা। সুতরাং আপনারা ইয়াং বাংলার মাধ্যমে যে দেশ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন তা আওয়ামী লীগের কারণে সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফারহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিআরআইয়ের সমন্বয়ক তন্ময় আহমেদ ও ২০১৭ সালের জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী জহির ইকবাল। এ ছাড়াও অংশগ্রহণকারী হিসেবে ছিলেন বিগত তিনবার জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী, ইয়াং বাংলার জেলা সমন্বয়ক, ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর ও স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপের অংশগ্রহণকারীরা।

Scroll to Top