ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী অক্টোবরে ভারতে দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ভারতের সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকালে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান এবং তার শুভেচ্ছাও মোদির কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বলেন।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় আসীন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা এবং সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।’
নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘দুই দেশের জনগণের মধ্যে পরস্পরের দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রটিকে সহজ করার বিষয়ে বিশ্বাসী ভারত।’
জয়শঙ্কর এসময় বাংলাদেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে তার দেশের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।’
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে জলবিদ্যুৎ খাতে কার্যকর সহযোগিতার সম্ভবনা রয়েছে, যেহেতু, এর খরচও কম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত তাদের ব্যবসা এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, মোংলা এবং পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে পারে।’
দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রগুলো উত্তরোত্তর বাড়ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেল, সড়ক এবং আকাশ পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেক রুট ইতোমধ্যে উন্মুক্ত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে চমৎকার সহযাগিতা বিদ্যমান রয়েছে। দু’টি দেশ নিজেদের অনেক সমস্যাই দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধান করেছে।’
এপ্রসঙ্গে তিনি বিশেষ করে দু’দেশের মধ্যকার স্থল ও সীমানা সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘স্থল ও সীমানা চুক্তি অনুযায়ী এর সমাধান বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। ভারতের সব রাজনৈতিক দল তাদের সংসদে স্থল ও সীমানা চুক্তি সংক্রান্ত বিলের প্রতি সর্বসম্মতভাবে সমর্থন জানায়।’
ভারতকে বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নতুন দিল্লি বাংলাদেশের প্রতি অব্যাহতভাবে সমর্থন জানিয়ে আসছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে তিন দিনের সরকারি সফরে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবিবার বাংলাদেশে আসেন।
গত ৩০ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর এটাই জয় শঙ্করের প্রথম বাংলাদেশ সফর।