গাইবান্ধায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন পরিদর্শন রেলওয়ের মহাপরিচালকের

দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইনে ‘ঈদে রেলপথে চার জেলার মানুষের ভোগান্তির আশঙ্কা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর শনিবার বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান গাইবান্ধা থেকে বোনারপাড়া জংশন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন পরিদর্শন করেছেন।

এবারের বন্যায় সান্তাহার-লালমনিরহাট রেল রুটের গাইবান্ধার বাদিয়াখালি রেলস্টেশন থেকে ত্রিমোহনী রেলস্টেশন ৬ কিলোমিটার রেল পথ পানির তীব্র স্রোতে ৭টি স্থানে স্লিপার, পাথর ও মাটি সরে গিয়ে রেল লাইন ঝুলে যায়। এছাড়া একেকটি স্থানে ১৫ থেকে ২৫ মিটার পর্যন্ত গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গত ১৭ জুলাই বুধবার থেকে একটানা ১১ দিন যাবত এই রুটে রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের রেল যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

শনিবার বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন পরিদর্শন শেষে গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, গাইবান্ধার আপ স্টেশন ত্রিমোহিনী-বাদিয়াখালী-বোনারপাড়া জংশন পর্যন্ত এক হাজার ফুট রেল লাইনের নিচের মাটি ও পাথর বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে। এসব এলাকায় রেললাইন ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া আরো একাধিক স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং তাতে বন্যার পানি জমে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত এ সমস্ত রেললাইন দ্রুত মেরামত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যাতে রেল যাত্রীরা ঈদ যাত্রায় স্বাচ্ছন্দে বাড়ি ফিরতে পারে।

তিনি আরও জানান, বন্যার পানি বা বৃষ্টির প্রকোপ না বাড়লে ঈদের আগেই সান্তাহার-লালমনিরহাট রুটে রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত করা সম্ভব হবে।

রেললাইন মেরামত না হওয়া পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে রংপুর থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি এক্সটেনশন করে পার্বতীপুর হয়ে ঢাকা পর্যন্ত চলাচল করানো যায় কিনা উপস্থিত সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২২ জুলাই ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ পরিদর্শনে আসেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার শহিদুল ইসলামসহ রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি জানিয়ে ছিলেন, যেভাবে রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে এ রুটে সরাসরি ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে সময় লাগবে। তাই এখনেই সুনির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ঈদুল আজহার আগেই যাতে ট্রেন চলাচল সম্ভব হয় সেব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে এই রুটে চলাচলকারী করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি এখন সান্তাহার থেকে গাইবান্ধার বোনারপাড়া পর্যন্ত চলাচল করছে। এছাড়া দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিনাজপুর থেকে গাইবান্ধা, সেভেনআপ ও এইট ডাউন মেইল ট্রেনটি পঞ্চগড় থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত সাময়িকভাবে চলাচল করছে। এদিকে, রংপুর ও লালমনিরহাট এক্সপ্রেস ট্রেন দু’টি কাউনিয়া-পার্বতীপুর-সান্তাহার রুট ব্যবহার করে ঢাকায় যাওয়া-আসা করছে। অন্যদিকে, ১৯/২০ বগুড়া এবং পদ্মরাগ ট্রেন দু’টি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

ইত্তেফাক

Scroll to Top