‘রংপুর পল্লী­নিবাস’ এরশাদের অসমাপ্ত উপাখ্যান..

রংপুর মহানগরীর দর্শনা মোড়ের মহাসড়কের পাশেই অবস্থিত সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নিজ বাসভবন পল্লীনিবাস। রংপুরে পল্লীনিবাস ছাড়াও এরশাদের আরও একটি বাড়ি রয়েছে পিত্রালয় ‘স্কাই ভিউ’। তবে তিনি রংপুরে আসলে সব সময় পল্লীনিবাসেই উঠতেন এবং রাত যাপন করতেন। আর এই পল্লীনিবাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রাজনৈতিক উত্থান-পতনের বড় একটি অংশ। আর স্কাই ভিউতে থাকেন তার ভাইয়েরা।

পল্লীবন্ধুর সেই পল্লী­নিবাস পুরাতন ভবনটি সংস্কার করে তৃতীয় তলা ভবন তৈরি করা হচ্ছে। এতোদিন বাউন্ডারির মধ্যে আলাদা আলাদা ভবন ছিল। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ থাকতেন দ্বিতল ভবনে। আর অন্যান্য স্টাফদের ছিল একতলা ভবন। পুরনো ভবন ভেঙ্গে এখন তৃতীয় তলা কমপ্লেক্স করা হচ্ছে। দ্বিতীয় তলায় এরশাদ ও ছেলে এরিকের কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলার কাজ শেষ, তৃতীয় তলার ফিনিশিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। বলা হচ্ছে, প্রায় বাড়ির ৮০ভাগ কাজ শেষের পথে।

গত ২৮ জুন রংপুর আসার কথা ছিল শুধু পল্লীনিবাসের নির্মাণ কাজ দেখার জন্য। তবে জীবনের শেষ সময়ে এসে আগের স্থাপনা ভেঙ্গে বহুতল ভবন তৈরি করলেও তা দেখে যেতে কিংবা একরাত অবস্থান করতে পারলেন না সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। অসুস্থ শরীর নিয়ে ঢাকা থেকে ‘পল্লীনিবাস’ দেখতে আসার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তার আগেই প্রকৃতির নিয়মে পৃথিবী মায়া ত্যাগ করে চিরবিদায় নিতে হলো সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে।

জানা যায়, সংসদ নির্বাচনের পর গত ৩ মার্চ রংপুর সফরে এসেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তখনও বাড়ির কাজ দেখতেই রংপুরে এসেছিলেন জাপা চেয়ারম্যান এবং এরপর গত ২৮ জুন রংপুরে আসার কথা ছিল এরশাদের। সফরে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। বাড়ির নির্মাণ কাজ দেখতেই এবং নির্মাণাধীন বাড়িতেই এবার ওঠার কথা ছিল তার। দুই রাত অবস্থান শেষে ৩০ জুন তার ঢাকায় ফেরার কর্মসূচিও চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে এরশাদ আর রংপুরে আসতে পারেননি। আর তাই এখানেই সাবেক এই রাষ্ট্রপতির দাফন দেওয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা থেকে শুরু করে রংপুরবাসী।

Scroll to Top