স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের পূর্বের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিএনপি। এই সরকারের আমলে আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো নিয়ে কৌশল বদল করেছে বিএনপি। এখন থেকে অনুষ্ঠিতব্য সকল স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে দলটি। তবে বিএনপি প্রার্থীদের ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে না। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন বিএনপি মনোনীতরা।
তাই আগামীতে আসন্ন তিন সিটি নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে থাকবেন বিএনপির প্রার্থী। গতকাল শুক্রবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাচন ৪ ধাপ পর্যন্ত বর্জন করে বিএনপি। যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হন তাদেরকেও বহিষ্কার করে দলটি। ফলে দুই শতাধিক প্রার্থী এখনো বহিষ্কৃত রয়েছেন। সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরের পর শেষ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশ নেন বিএনপির প্রার্থীরা। সেক্ষেত্রে দলের পক্ষ থেকে আর বাধা দেয়া হয়নি।
জানা যায়, দলীয় ৬ এমপির সংসদে যোগদানের পর বগুড়া-৬ আসনের নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। সেখানে বিএনপি প্রার্থী জিএম সিরাজ বিজয়ী হন। স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, তিন সিটিসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ভোট বর্জন করলে তৃণমূলে হতাশা বেড়ে যাবে। বরং নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নেতাকর্মীরা সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া আওয়ামী লীগকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেয়া ঠিক হবে না। সব মিলিয়ে নির্বাচন বর্জনের চেয়ে অংশগ্রহণকেই ইতিবাচক ভাবছেন তারা।
আর এই বিষয়টি বিবেচনা করেই স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছরের শুরুতে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। বিএনপি অংশ না নেওয়ায় চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটির উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে অনেকটা ফাঁকা মাঠে মেয়র পদে বিজয়ী হন ব্যবসায়ী নেতা মো. আতিকুল ইসলাম।
এদিকে গতকাল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচন হচ্ছে। এখনো পুরো সিডিউল আসেনি। এর মধ্যে আমাদের কাছে বিভিন্নভাবে নেতা-কর্মীরা জানতে চাচ্ছেন আমাদের অবস্থান কি ? আমরা এখনো মনে করি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মার্কা ব্যবস্থা তুলে নেয়া উচিত। সেই ক্ষেত্রে আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী বা যারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন তারা যদি কেউ অংশ নিতে চান, অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমরা মার্কা বরাদ্দ করব না।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রিফাত হত্যার পর যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা বাংলাদেশের আইন-আদালত ও রাষ্ট্রের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা মনে করি, নয়ন বন্ডকে হত্যা করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আসল মদদদাতা যারা তাদেরকে আড়াল করা।