নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে চায় রোহিঙ্গারা

কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে চায় নিজ মাতৃভূমি মিয়ানমারে। তাদের একমাত্র দাবি, রোহিঙ্গা জাতিসত্তার স্বীকৃতি। সেই সাথে মর্যাদা নিয়ে নিজ দেশে বসবাসের অধিকার।

কতটা অসহায় হলে নিজ জন্মভূমি ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে ভিন দেশে পালিয়ে আসতে হয়েছে মছিয়াদের। চোখের সামনে স্বামীকে হত্যা করতে দেখেও নিজের প্রাণ বাঁচাতে পায়ে হেটেই পাড়ি দিতে হয়েছে মাইলের পর মাইল পথ। নিজে বাঁচলেও হারিয়েছেন স্বামী সন্তানসহ পরিবারের আরো অনেককে।

ধর্মীয় ও জাতিগত সহিংসতায় সব হারিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছে ৯ লাখ ১০ হাজার ৯০৮ জন রোহিঙ্গা। এই তথ্য জাতিসংঘ শরনার্থী কমিশন, ইউএনএইচসিআর-এর। এর মধ্যে পরিবার রয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার ২১৭ টি। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যা প্রায় ৫৫ ভাগ। এদের বেশির ভাগ এসেছে মিয়ানমারের মংডু থেকে; যা প্রায় ৬৭ ভাগ। ২৬ ভাগ এসেছে রাষ্ট্রটির বুথিডং আর ৫ ভাগ এসেছে রাথিডং থেকে।

কক্সবাজারের উখিয়া আর টেকনাফ উপজেলায় আশ্রয় নিয়ে সরকারি সহযোগিতার বাইরেও দেশি বিদেশী ১৫০ টি বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে টিকে আছে এই জনগোষ্ঠী। তবে, আর সহযোগিতায় নয়, জাতিস্বত্ত্বার স্বীকৃতি নিয়ে নিজ ভূ-খন্ডে ফিরে যেতে চায় রোহিঙ্গারা। চায় মিয়ানমারে ফিরে বেঁচে থাকার অধিকার।

তারা জানায়, মগরা আমাদের মারে, মা বোনদের নির্যাতন করে। ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই যদি তারা আমাদের অধিকার ও রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা দাতা সংস্থাগুলো বলছে, কূটনেতিক চাপ কিংবা কৌশল যে কোনভাবে হোক, এখনই রাখাইনে রোহিঙ্গাদের পাঠানোর উপযুক্ত সময়।

এনজিও সংস্থা ফ্রেন্ডশীপের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক রুনা খান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের যতটুকু সামর্থ্য ছিল তারা তাদেরই সবটুকুই করেছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও দেশের নিরাপত্তা নিয়েও কিন্তু সরকার চাপে আছে। তাই আমি মনে করি যত দ্রুত সম্ভব তাদেরকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো উচিত।

প্রায় দুই বছর ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্ব মানবতায় দৃষ্টান্ত দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এখন সময় এসেছে নিজ মাতৃভূমিতে তাদের ফিরিয়ে দেয়ার। ফিরে যেতে আগ্রহী এসব রোহিঙ্গারাও। তবে তারা বলছেন, নিজ মাতৃভূমিতে তাদের বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দরকার।

লেটেস্টবিডিনিউজ/কেএস

Scroll to Top