প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ

স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে ট্রেন, বাস ও লঞ্চে বাড়ির পথে ছুটছে মানুষ। লঞ্চ আর বাসে স্বস্তিতেই বাড়ির পথে যাত্রা করতে পেরেছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে ঈদযাত্রার শুরুতেই ছিল ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়। আগামী ৫ জুন সম্ভাব্য ঈদ ধরেই স্টেশনগুলোতে শুক্রবার থেকে বেড়েছে ভিড়। আগামী দু’দিন এই ভিড় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। রোববার শবে কদরের ছুটি। সোমবার ঈদের আগে সবশেষ কর্মদিবস। ৪ থেকে ৬ জুন বা মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার ঈদের ছুটি। এরপর ৭ ও ৮ জুন শুক্র ও শনিবার। লম্বা ছুটির ফাঁদ। যে কারণে অনেকেই আগেভাগে বাড়ি ফিরছেন।

ঈদযাত্রার শুরুতে স্বস্তির কথাই জানালেন ঘরমুখো মানুষ। কোনো মহাসড়কে নেই যানজট, ঢাকার কাউন্টারগুলো থেকে সময়মতো ছাড়ছে বাস, তাৎক্ষণিক টিকেটও মিলছে।

সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রীরা। ঈদ সামনে রেখে দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতু খুলে দেওয়ায় এতদিনের যানজটের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছেন তারা।

তাদের পাশাপাশি ঢাকা থেকে সিলেটের যাত্রীদেরও বড় ভোগান্তির অবসান ঘটেছে কাঁচপুরে দ্বিতীয় শীতলক্ষ্য সেতু চালু হওয়ায়। কাঁচপুর পার হতে যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যেত এখন সেখানে কয়েক মিনিটের এই পথ পেরিয়ে যেতে পারছেন তারা।

জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মাওয়া ফেরিঘাট ফাঁকা দেখা গেছে। পাটুরিয়া ঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি নেই। নির্বিঘ্নে পারাপার করছেন যাত্রীরা। ভোগান্তি এড়াতে অনেকেই আগে-ভাগে বাড়ি পাঠিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের

শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের শ্রীপুর থেকে বাইপাইল পর্যন্ত ঢাকামুখী ৩ কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থেকে দশ কিলোমিটার যানজট দেখা গেছে। শুক্রবার ভোর থেকেই বঙ্গবন্ধ সেতুর পশ্চিম সংযোগ সড়কের হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকতে দেখা যায়। তবে দুপুরের আগেই রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেছে।

পাশাপাশি সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ভিড় বেড়েছে। সবকটি লঞ্চ যাত্রী ভর্তি হয়ে নদী বন্দর ছাড়ছে।

তবে রেল স্টেশনে এখনো টিকিটের খোঁজে অনেকেই আসছেন। ৩ জুন বা ৪ জুন ঈশ্বরদী যেতে কাউন্টারে টিকিটের সন্ধান করছিলেন রুবিনা আক্তার। কিন্তু এই দু’দিনের কোনো টিকিট আর খালি নেই। শেষে টিকিট না পেয়ে কমলাপুর ছেড়ে বাস কাউন্টারের দিকে ছুটলেন তিনি।

একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন শহীদুল হক। স্ত্রী-সন্তানকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে তুলে দিলেন তিনি। ঈদের আগের দিন বাড়ি ফিরবেন তিনি।

তিনি জানান, পরিবার ট্রেনে যাচ্ছে এটাই তার কাছে স্বস্তির বিষয়। সড়ক পথে যাত্রা নিরাপদ মনে করেন না তিনি। তবে অফিশিয়াল কাজে তার ঢাকায় থাকতে হচ্ছে এখন। চাঁদ রাতে বাড়ির পথে রওয়ানা দেবেন তিনি।

কমলাপুর থেকে প্রথম দিনের ঈদ যাত্রায় প্রায় অর্ধলাখ মানুষ বাড়ির পথে ছুটছেন। সারাদিনে ৫২টি ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে। এর মধ্যে ভিড় বেশি দেখা যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের ট্রেনগুলোতে।

ঈদের মওসুমে এবার রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি ভালো দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘স্বস্তিদায়ক’ হবে বলেই তার প্রত্যাশা।

লেটেস্টবিডিনিউজ/এনপিবি

Scroll to Top