আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী। ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন প্রেম, মানবতা ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। এছাড়াও দিবসটি উদযাপনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন সংস্থা বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এ বছর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হচ্ছে নজরুল স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে বিকেল ৩টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী ও সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিল।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কবিপৌত্রী ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য খিলখিল কাজী। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি। নজরুল স্মারক বক্তা হিসেবে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ উপস্থিত থাকবেন। কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের এবারের প্রতিপাদ্য- নজরুল-চেতনায় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তার ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে। এ উপলক্ষে নজরুল মেলা, নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পোস্টার মুদ্রণ ও স্মরণিকা প্রকাশ করেছে। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট জাতীয় কবিকে বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গে পরিচিত করার লক্ষ্যে কবির ছবি, পোস্টার ও বই প্রদর্শনীর আযোজন করেছে এবং গণগ্রন্থাগার অধিদফতর বই প্রদর্শনী, পাঠ প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।
এছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অন্যান্য দফতর ও সংস্থাসমূহ এ উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে।
ঢাকাসহ দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহ যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করেছে। যে সকল জেলায় জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নজরুল জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে না, সে সকল জেলার প্রশাসকগণ স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় কমিটি গঠন করে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করেছে।
জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও অন্যান্য অনুষ্ঠানমালা বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি চ্যানেলসমূহ ব্যাপকভাবে সম্প্রচার করবে।
জাতীয় কবির ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জাতীয় পর্যায়ের মূল অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানসমূহে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে।