মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং সরকারি সংস্থাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ বিষয়ে অবহিত করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান ভূমি কর দিচ্ছে না তাদেরও দ্রুত কর পরিশোধ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছে এসব বিল দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকে। এটা স্বচ্ছতার প্রশ্ন। বকেয়া বিল দ্রুত দিয়ে দেওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী বকেয়া আদায়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে নোটিশ জারির নির্দেশনাও দিয়েছেন।
এম এ মান্নান আরও জানান, জ্বালানি তেল আমদানি বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মধ্যে তৈরি হওয়া জটিলতা দূর করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। জটিলতা নিরসনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারি বিনিয়োগের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগের সুযোগ যাতে সংকুচিত না হয়ে যায়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সব খাতেই বেসরকারি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে সরকার। বেসরকারি খাতের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। তবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সরকারি বিনিয়োগই গুরুত্ব পাবে। বেসরকারি খাতের প্রধান লক্ষ্য হলো বাণিজ্য করা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাণিজ্যিকীকরণ বাড়লে জনগণ প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হবে। এ কারণে জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সরকারি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ।
মন্ত্রী জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্পের কাজে অহেতুক জমির ব্যবহার করা যাবে না। ফসলি জমিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। প্রকল্প এলাকায় খাস জমি থাকলে ভূমি অধিগ্রহণ নিরুৎসাহিত করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে তার প্রকৃত হিসাব আলাদা আলাদাভাবে প্রকাশ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠকে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তি এনে গবেষণা চলমান রাখতে হবে। গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া যাবে না। আবার একটি বিষয়ের গবেষণা যেন অনন্তকাল না চলে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে মেধাস্বত্ব অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কেননা ইতিমধ্যে আমাদের পণ্যের মেধাস্বত্ব অন্য দেশ নিয়ে গেছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে অনিয়মের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এম এ মান্নান বলেন, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর বাইরে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগকে (আইএমইডি) সরেজমিন খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এরপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।