আগামী ৪ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সৌদি আরবের মক্কায় পবিত্র হজের উদ্দেশে হাজীদের প্রথম বেসরকারি হজ ফ্লাইট এবং শেষ ফ্লাইট ছাড়বে ৫ আগস্ট। শনিবার (১১ মে) নয়াপল্টনের হোটেল ভিক্টোরিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন, হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি শাহাদত হোসাইন তসলিম।
বাংলাদেশের ওমরাহযাত্রী ও মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীদের ফ্লাইটে তীব্র আসন সংকট ও দ্বিগুণ ভাড়া বাড়ায় উদ্ভূত জটিলতা নিরসনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে হাব। হজে যেতে প্রতারণা এড়াতে হাজীদের উদ্দেশ্যে হাব সভাপতি শাহাদত হোসাইন বলেন, কোনো মধ্যস্বত্বভোগীকে টাকা দেবেন না। হজে যেতে সরাসরি এজেন্সিতে এসে টাকা দিয়ে রশিদ সংরক্ষণ করবেন। অথবা এজেন্সির একাউন্টে টাকা জমা দিন।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা থেকে সৌদিগামী ফ্লাইট বাড়ানোর জন্য বিমান বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ করা হয়। এছাড়া, বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট বাড়ানোর জন্য সিভিল এভিয়েশনকে উদ্যোগ নিতে আহ্বান করেন হাব সভাপতি তসলিম।
হজের আনুষ্ঠানিকতার দিন ছাড়া সারা বছর এখন উমরা হজে মানুষ যেতে পারেন জানিয়ে তিনি বলেন, উমরা যাত্রী অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। তবে, ফ্লাইট না পাওয়ায় প্রায় ২০ হাজার উমরা যাত্রীর উমরা অনিশ্চিত। যাদের হোটেল বুকিংয়ের টাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, চলতি বছর ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এয়ারলাইন্সগুলোতে আসন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ সুযোগে এয়ারলাইন্সগুলো বিমান ভাড়া অসহনীয় মাত্রায় বৃদ্ধি করেছে। আগে যেখানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা সরাসরি বিমানভাড়া ছিল ৫০ হাজার টাকা বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা ওমরাহ যাত্রীদের বিমানভাড়া ৮০-৮৫ হাজার টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯০-৯৫ হাজার টাকাও নেয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বেশি ভাড়া দিয়েও ফ্লাইটের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।
বিগত বছরগুলোতে সৌদি কর্তৃপক্ষ বছরের নির্দিষ্ট ৬/৭ মাস (জানুয়ারি থেকে জুন) পর্যন্ত ওমরাহ ভিসা প্রদান করলেও চলতি বছর থেকে সারা বছর (হজের এক সপ্তাহ বাদ দিয়ে) ভিসা প্রদান করছে। গত ৮ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০৮ জনকে ভিসা দিয়েছে। বিমানে আসন সংকটের কারণে বহু ওমরাহযাত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র রোজার মাসে সময়মতো টিকিট না পেলে ২০ হাজার যাত্রী ওরমাহ পালন করতে পারবেন না। আর্থিক বিবেচনায় ৯০ থেকে ১০০কোটি টাকার আর্থিক লোকসান হবে।
সরকারের অভিবাসন ব্যয় কমানো নীতিমালা থাকলেও বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যগামী অভিবাসীদের বিমানভাড়া বাড়ার কারণে অভিবাসন ব্যয় অনেক বেড়েছে। অসহায় গরিব অভিবাসন প্রার্থীরা বর্ধিত টাকার ব্যয় বহন করতে না পারার কারণে অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বা ভিসা বাতিল হচ্ছে। তাছাড়াও ছুটিতে আসা অনেক অভিবাসীরা বিমানের আসন সংকট ও ভাড়া বাড়ার কারণে গন্তব্যে ফিরতে পারছেন না।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা অভিবাসীদের বিমান ভাড়া ৬০-৬৫ হাজার টাকা যেখানে আগে ২২-২৪ হাজার টাকা ছিল। অতিরিক্ত বিমানভাড়ার টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আকারে নিয়ে যাচ্ছে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো। সমস্যা সংকট সমাধানে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তাবনা পেশ করেন হাব সভাপতি।