অনেক আতঙ্ক ছড়িয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশ ছেড়ে গেছে। বাংলাদেশের জামালপুর-নেত্রকোণা অতিক্রম করে ভারতের মেঘালয়ে প্রবেশ করেছে। হ্যারিকেনের গতি সম্পন্ন ভয়াল রূপে এসে এটি এখন শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ সময় শনিবার (৪ মে) রাত ৮টার পর জামালপুর-নেত্রকোণা অতিক্রম করেছে বলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
বঙ্গোপসাগরের সৃষ্টি এই ভয়াল প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ শুক্রবার (৩ মে) ভারতের ওড়িশা রাজ্যে প্রবেশ করে। সেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাণ্ডব চালায় ‘ফণী’। পরে এটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য হয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করে শনিবার (৪ মে) সকাল ৬টার দিকে। ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ‘ফণী’ ছোবলে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে। কয়েক হাজার বাড়ি-ঘর ও ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সাতক্ষীরা হয়ে যখন প্রবেশ করে ঘূর্ণিঝড়টি তখন এটির ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের ওপরে। পরে এটি মেহেরপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে হয়ে পাবনায় প্রবেশ করে। দুপুরের দিকে এটি আরও দুর্বল হয়ে টাঙ্গাইল হয়ে ময়মনসিংহে প্রবেশ করে। তখন এটি সম্পূর্ণ শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়।
তখন আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালক আয়েশা খাতুন, গতি কমে বর্তমানে ফণী প্রতি ঘণ্টায় মাত্র ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে এগুচ্ছে। বর্তমান যে অবস্থায় আছে তা গভীর নিম্নচাপ আকারে আছে। এর প্রভাবে দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া হতে পারে।
এদিকে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়, বজ্রপাতে ও বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে ২১ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ের গাছপালা পড়ে, বজ্রপাতে ও বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে শুক্রবার এবং শনিবার দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে অধিফতর থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে রবিবারও (৫ মে) বৃষ্টিপাত হবে। আজকে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের অনেক স্থানে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। অনেক স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এখনও গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টি হতে পারে ঝড়ো হাওয়াসহ। যার গতিবেগ থাকতে পারে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার।’
এদিকে অধিদফতরের পরিচালক শাসুদ্দীন আহমেদ দুপুরে সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশ এখন অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত নামিয়ে এর বদলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।