প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। এ কারেণ যেকোনো ধরনের ঝুঁকি বা দুর্ঘটনা এড়াতে পদ্মা সেতুতে ১২তম স্প্যান ‘৫-এফ’ বসানোর পরিকল্পনা বাতিল করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৩ মে) সকালে সেতুর ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা ছিল প্রকৌশলীদের।
বৃহস্পতিবার (২ মে) মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে নির্ধারিত পিলারের কাছে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন বহন করে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের উপ সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির গণমাধ্যমকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ১২তম স্প্যান বসানো পরিকল্পনা সাময়িক বাতিল করা হয়েছে।
পদ্মা সেতুর সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র কারণে ১২তম স্প্যান ‘৫-এফ’ বসানো হচ্ছে না শুক্রবার। রোববারের (৫ মে) পরে স্প্যানটির বসানোর সিদ্ধান্ত হবে। এখন স্প্যানটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে রয়েছে।
সেতুর ২০ ও ২১ নম্বর পিলারের ওপর ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যান বসানো হলে দৃশ্যমান হবে ১৮০০ মিটার। এর আগে, ২৩ এপ্রিল জাজিরায় ১১তম স্প্যানটি বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় ১ হাজার ৬৫০ মিটার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, ২০ ও ২১ নম্বর পিলার স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত। প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র কারণে স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে স্প্যানটি বসানো হবে। যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা যায়, পদ্মা সেতুতে ২৫টি পিলার প্রস্তুত রয়েছে। ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৬১টি পাইল ড্রাইভ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। জাজিরায় স্প্যানগুলোতে রেলওয়ে স্ল্যাব ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ চলমান আছে। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।