\’মেয়েটির অবস্থা সঙ্কটাপন্ন\’

ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া সেই ছাত্রীর (১৮) অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। এমনটাই জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

রোববার সকালে তিনি জানান, ‘মেয়েটির শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল। তার ব্যাপারে চিকিৎসকরা এখনও কিছু বলতে পারছে না। মেয়েটির চিকিৎসা চলছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।’

৭৫ শতাংশ পোড়া শরীর নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে ফেনীর ওই ছাত্রীকে। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা অপরিবর্তিত। তার সুস্থ হয়ে ওঠাটা কঠিন।

রোববার সকালে তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল বলেন, তার অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। শরীরের তিন-চতুর্থাংশ পুড়ে গেছে। শ্বাসনালিও পুড়ে গেছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার মা, বড় ভাই, মেজ ভাই ও চাচাতো ভাই বার্ন ইউনিটে রয়েছেন। তার মা মেয়ের জন্য হাসপাতালের মেঝেতে বসে বিলাপ করলে স্বজনরা তাকে সান্ত্বনা দেন।

ঢামেকে বোনের বাঁচা মরার চিন্তায় শঙ্কিত তার ভাই বলেন, ‘আজ সকালে বোনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তখন তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক দেয়া ছিল। সে পানি খেতে চেয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকের নিষেধ থাকায় পানি দেয়া যায়নি। তার অবস্থা গতকালের মতোই আছে।’

তার চাচাতো ভাই বলেন, ‘চিকিৎসকরা আমাদের কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। তারা আল্লাহকে ডাকতে বলছেন। আমরা সবাই অসহায়।

মোবাইল ফোনে এক স্বজনকে ছাত্রীর অবস্থা সম্পর্কে জানান তার চাচাতো ভাই। তিনি বলেন, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার বাঁচার আশা ক্ষীণ।

প্রসঙ্গত ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর ওই ছাত্রীর (১৮) গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যাচেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকালে সোনাগাজী পৌর এলাকার ইসলামিয়া সিনিয়ার ফাজিল মাদ্রাসাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রী ওই মাদ্রাসা থেকেই আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত কক্ষ থেকে ছাদে ডেকে নিয়ে কয়েকজন বোরকা পরা নারী পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে না নেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ তথ্য ফেনী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় পুলিশকেও জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী। তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় এদিন বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ১০২ নম্বর কক্ষে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।

Scroll to Top