নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কলেজছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে হত্যার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিল ইমন। আর এ উদ্দেশকে সফল করতেই ইমন ঢাকা থেকে নতুন একটি চাপাতি ক্রয় করে। তারপর ইমন তার ফেসবুক আইডিতে এ ঘটনার আভাস দিয়ে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বীকার করেছে।
ইমন ঘটনার ৩ দিন আগে গত ১৩ অক্টোবর সর্বশেষ তার ব্যবহৃত ‘অন্ধ কার জীবন’ নামের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে লিখেছিল- ‘কিছু একটা হবে। পরে বুঝবি, আমি ক্যাডা’।
পূর্ব পরিকল্পনা মতে ইমন ওই ছাত্রীকে হত্যার উদ্দেশে ঘটনার দুইদিন আগে থেকেই কেন্দুয়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকায় তার ভগ্নীপতি সোহাগের বাসায় অবস্থান নেয়। কারণ ওই এলাকার এক ভাড়া করা বাসায় থেকে স্থানীয় পারভীন সিরাজ মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করত জান্নাতুল ফেরদৌস।
ঘটনার দিন গত ১৭ অক্টোবর মঙ্গলবার বিকেলের দিকে ইমন জান্নাতুলকে কেন্দুয়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকায় প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন কলেজছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। জান্নাতুল বর্তমানে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ রেল স্টেশন এলাকা থেকে ইমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গত বৃহস্পতিবার আদালত থেকে ৩ দিনের রিমান্ড এনে ইমনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দুয়া থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার পাথাইরকান্দি গ্রামের ওই কলেজছাত্রীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে ইমনকে আসামি করে কেন্দুয়া থানায় গত বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানার এসআই সঞ্জয় সরকার জানান, কেন্দুয়ার মোজাফফরপুর ইউনিয়নের গগডা ভ’য়াপাড়া গ্রামের মহর আলীর ছেলে ইমন জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। কয়েকদিন আগেই সে কলেজছাত্রী জান্নাতুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে নতুন যে চাপাতিটি উদ্ধার করা হয়েছে সেটি ইমন এ উদ্দেশেই ক্রয় করে।
কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ইমনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রেমের সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করায় ইমন একাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে