শেরপুর পৌরসভার পরিত্যক্ত একটি পুরনো ভবনে এক কিশোর গ্যাংয়ের চার সদস্য মিলে এক হাফেজকে ৪৭ মিনিট ধরে অমানুষিক মারধর করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার দুপুরে। ওই হাফেজের নাম আশিকুর রহমান পাপ্পু (১৫)। পাপ্পু সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের কানাশাখোলার বলবাড়ী এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
নির্মমভাবে প্রহারের ভিডিওটি শেরপুরে ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তেই। প্রহারের এমন নির্মমতা দেখে মানুষের আফসোসের শেষ নেই। বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলো শহরের বটতলা এলাকার গোলাম মাহবুবের ছেলে সিয়াম (১৬), আমিনুল ইসলাম বাবুলের ছেলে শুভ (১৬), বেলাল হোসেনের ছেলে আরমান (১৫) ও সুজন মিয়ার ছেলে সাজেদুল ইসলাম নাসিম (১৭)।
মামলার বাদী ভিকটিমের বাবা মোহাম্মদ আলী। কারাগারে পাঠানোর এক দিনের মাথায় গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মো. আখরুজ্জামান উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গ্রেফতার চারজনকে জামিন দিয়েছেন। এই কিশোর গ্যাংয়ের অপকর্ম ও দুর্বল মামলার ধারা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শেরপুর জজ আদালতের পিপি চন্দন কুমার পাল এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের পিপি গোলাম কিবরিয়া বুলু। জানা গেছে, শহরের গৃর্দা নারায়ণপুরে অবস্থিত শের আলী গাজী।
এর পেছনে বসবাসকারী এক মেয়েকে ভালোবাসে ওই হাফেজ পাপ্পুর বন্ধু শুভ। পাপ্পু মেয়েটির মোবাইলে খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠায়। বিষয়টি প্রেমিক শুভ জানতে পেরে পাপ্পুর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। প্রেমিকার কাছে হিরো সাজতে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে পাপ্পুকে বেদম প্রহার করে শুভ। পরে এ ঘটনার ভিডিও প্রেমিকার কাছে পাঠিয়ে দেয় সে।
এদিকে আসামিদের জামিন হওয়ার পর থেকেই তুমুল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মধ্যে। বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট নাগরিক রাজনীতিক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা বলেন, ‘আমরা বিস্মিত হয়েছি।
যদি আইনের ফাঁক গলে এভাবে ক্ষমা পেয়ে যায় তবে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে সমাজ।’ পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল ও অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলুু বলেন, ওই ভিডিও এবং হাসপাতালে ভর্তি-সংক্রান্ত কাগজ বাদীপক্ষ সরবরাহ করেনি। মামলার দুর্বল ধারা ও আসামিদের বয়স কম বিবেচনায় আদালত জামিন দিয়েছে। শাস্তি না হলে কিশোর অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে।