আজ ময়মনসিংহ নগরের এসকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুস সাত্তার নামের জামালপুরের একজন করোনার রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে মারা যান তিনি। তার বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার কাপাসহাটিয়া গ্রামে। একই দিনে জেলায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ নতুন করে আরো ১২ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। জেলার সিভিল সার্জন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস জানান, জামালপুরের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টার থেকে গতকাল বুধবার ময়মনসিংহের এস কে হাসপাতালে রেফার্ড করা করোনার রোগী আব্দুস সাত্তার (৫৫) আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মারা গেছেন।
মৃতের করোনার অন্যান্য সব উপসর্গের পাশাপাশি তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে ময়মনসিংহে রেফার্ড করা হয়েছিল। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরদেহ মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের কাপাসহাটিয়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হবে।
আজ রাতের মধ্যেই তার মরদেহ দাফন করা হবে। এ ক্ষেত্রে আইইডিসিআরের সকল নিয়ম অনুসরণ করা হবে। ময়মনসিংহ থেকে তার মরদেহ আনার জন্য জামালপুর থেকে অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন চারজন। তাদের মধ্যে গত এপ্রিল মাসে জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় দুলাল মিয়া (৪০) নামের এক ব্যক্তি মারা যান ময়মনসিংহের এসকে হাসপাতালে। এছাড়া ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের দুই নারী আসমা আক্তার (২৮) ও মমতা বেগমের (২৮) মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
এদিকে জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাব থেকে আজ বৃহস্পতিবার পাওয়া প্রতিবেদনে ৯৩টি নমুনার মধ্যে নতুন করে ১২ জনের করোনা পজিটিভ নিশ্চিত হয়েছেন জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলায় একজন চিকিৎসকসহ তিনজন এবং মেলান্দহ উপজেলায় স্বাস্থ্যকর্মী ও পিতা-পুত্রসহ নয়জন রয়েছেন।
জামালপুর সদরে আক্রান্তদের মধ্যে ২৫০ শয্যার জামালপুর সদর হাসপাতালের একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (৫০), ইসলামপুর হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান (৩৫) ও অপর একজন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা পজিটিভ আসে।
মেলান্দহ উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে মেলান্দহ পৌর এলাকার নাগেরপাড়া গ্রামে আগে আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে থাকা সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগের একজন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের সংস্পর্শে আসা ৫৯ বছর বয়সের এক ব্যক্তি এবং তার ২২ বছর বয়সের ছেলে, মেলান্দহ পৌর এলাকার উত্তর আদিপৈত গ্রামে আগে আক্রান্ত হয়ে হোম আইসোলেশনে থাকা এক পল্লীচিকিৎসকের ছেলে (৩৩), একই গ্রামের আরেক ব্যক্তি (৪৭), সরদারবাড়ি এলাকার এক যুবক (৩০), নয়ানগর ইউনিয়নের সাধুপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের নারী সিএইচসিপি (৩৩) ও একই ইউনিয়নের ফুলছেন্না গ্রামের ৬০ বছর বয়সের এক ব্যক্তি, কুলিয়া ইউনিয়নের ভালুকা গ্রামের একজন নারী (৪৩) এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তির করোনা পজিটিভ আসে।
নতুন করে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের আইসোলেশন প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস জানান, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে হোম আইসোলেশনে এবং কয়েকজনকে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নতুন আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন আক্রান্তসহ জেলায় এ পর্যন্ত ১৬৯ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হলো বলে জানান তিনি।