ময়মনসিংহে ৩ ছাত্রীকে ধর্ষণ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল উপজেলায় তিন ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (১২), একজন মাদরাসার (১৫) ও আরেকজন কলেজছাত্রী (১৮)।

নান্দাইল উপজেলায় ঘটা একটি ঘটনায় গতকাল শনিবার থানায় মামলা হয়েছে। তবে নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার অন্য দুই ঘটনায় সালিস হয়েছে। আজ রবিবারের মধ্যে অভিযুক্ত দুই ধর্ষককে ওই দুই ছাত্রীকে বিয়ে করতে বলা হয়েছে। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন সালিসকারীরা।

নান্দাইলের কলেজছাত্রী জানিয়েছেন, তিনি স্থানীয় একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন। বছরখানেক আগে উপজেলার চণ্ডীপাশা গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রাব্বির (২১) সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। মোস্তাফিজুর রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। একপর্যায়ে বিয়ের কথা বলে মোস্তাফিজুর ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। গত শুক্রবার রাতে মোস্তাফিজুর ওই ছাত্রীর বাড়িতে যায়।

তখন ছাত্রী তাঁকে বিয়ে করতে বললে মোস্তাফিজুর বিয়ে
করতে অস্বীকার করে। পরে এলাকার লোকজন মোস্তাফিজুরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ওই ছাত্রীকেও পুলিশ হেফাজতে দেয় এলাকাবাসী। তবে পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আপাতত ব্যবস্থা না নিয়ে বিয়ে করতে সময় দিয়েছে।

অভিযুক্ত ধর্ষককে হেফাজতে পেয়েও আটক বা গ্রেপ্তার না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে নান্দাইল থানার ওসি ইউনূস আলী বলেন, ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রী ও অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রকে তাদের নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। আজকের মধ্যে ফয়সালা না করলে মামলা হবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণ : নান্দাইল পৌরসভা এলাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন ছাত্রীর বাবা।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই ছাত্রীর প্রতিবেশী যুবক বাদল মিয়া (২২) গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানার কর্মী। কোরবানির ঈদের কয়েক দিন পর বাদল মিয়া ওই ছাত্রীকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। তখন ঘটনাটি প্রকাশ করে দেওয়ার কথা জানালে বাদল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্মস্থলে চলে যায়।

সম্প্রতি ঘটনাটি জেনে ওই ছাত্রীর বাবা গত শুক্রবার মেয়েকে নিয়ে থানায় গিয়ে বাদল মিয়াকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। এ মামলার ব্যাপারে নান্দাইল থানার ওসি ইউনূস আলী জানান, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আজ অভিযুক্ত ধর্ষক বাদলকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে।

ঈশ্বরগঞ্জে মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণ : এদিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের তারাটি গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে মো. রাকিব মিয়ার (২১) বিরুদ্ধে মাদরাসাপড়ুয়া অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সালিসকারীরা ওই ছাত্রীকে রাকিবদের বাড়িতে তুলে দিয়ে বিয়ের আয়োজন করতে বলেছেন। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা।

মাইজবাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে সালিসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউপি সদস্য আবদুল মোমিন চৌধুরী ভুট্ট গিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণকারীর বাড়িতে তুলে দিয়েছেন। বিয়ে না করলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি বদরুল আলম খান বলেন, নির্যাতনের শিকার মেয়েটি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ০১ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/নীল

Scroll to Top