বাংলাদেশে আপেল বাবা: চিকিৎসা করে দৈনিক আয় যার প্রায় লাখ টাকা

আপেল আর পানি দিয়ে সব ধরণের রোগের চিকিৎসার করছেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার ছফিলপুর গ্রামের মো. করিম খাঁন। করিম খাঁন হঠাৎ করেই স্বপ্নে পাওয়া ক্ষমতায় রাতারাতি দিনমজুর থেকে ফকির হয়েছেন বলে দাবি তার। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার মানুষ তার বাড়িতে চিকিৎসার জন্য ভিড় করছেন।

টিউমার, ক্যান্সার, গ্যাস্টিক, মাথ্যা ব্যাথাসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিদিন লম্বা লাইন সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। রোগ যাই হোক চিকিৎসা একটাই। ১ বোতল পানির সাথে ৫টি বা ১০টি আপেল, সরিষার তেল ও কর্পুর। যে কোন দোকান থেকে কিনে খেলেই দূর হয়ে যাবে রোগ। চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরা হুজুরকে ১০, ২০, ৫০, ১০০ টাকা পর্যন্ত হাদিয়া (বিনিময়) দিচ্ছেন।

এদিকে কথিত হুজুরের বাড়ি যেতে ছফিলপুর বাজারের খালে ৪ থেকে ৫টি ট্রলার ছেরে যাচ্ছে। প্রতি লোকের কাছ থেকে ১৫টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে। যেখানে প্রতি লোকের ভাড়া হয় ৫টাকা। কথিত হুজুরের (ফকির) বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রী নিয়ে যাওয়া ট্রলারের লোকজন বলেন, প্রতি দিন তারা ৫ থেকে ৬ হাজার লোক পরিবহন করেন। দিনে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আয় করেন তারা।

ফকির করিম খাঁন বলেন, ‘আমি খাজা খানজাহান আলী এর ভক্ত। ছোট থেকেই এর সাধনা করে আসছি, স্বপ্নে অলৌকিক ক্ষমতা পেয়েছি, এইটা একমাত্র আল্লাহরই ক্ষমতা। আল্লাহর ইচ্ছায় মানুষের সকল রোগ ভাল হয়ে যায়।’

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ডাক্তারের ঔষধ বন্ধ করে এই হুজুরের পানি ও আপেল খেতে হয়। আর এ পানির মাধ্যমে সমাধানের আশায় দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকে। ইমাম, কামাল, মিন্টু খাঁন, চামেলী অক্তারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, বিশ্বাস ভক্তির উপর আমরা আসছি। ভক্তি করলে আল্লাহ হয়ত মুক্তি দিতে পারেন।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। এটা সম্পূর্ণ ধোকা, ভুয়া এবং প্রতারণার সামিল। পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশক্রমে তাকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমাদের নজরদারীতে আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ০১  নভেম্বর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি