ভারতে যে লাখো মন্দির রয়েছে তার প্রতিটিরই আছে নিজস্ব তাৎপর্য। প্রতিটি মন্দিরই ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দিক থেকে একটি আরেকটি থেকে আলাদা।
এমনই একটি অনন্য মন্দির ভারতের গুজরাট প্রদেশের কাদি তালুকের মেহসানা জেলার ছোট্ট গ্রাম ঝুলাসানের \’দোলা মাতা মন্দির\’। যে মন্দিরে দোলা নামের এক মুসলিম নারীকে দেবি বানিয়ে তার পূজা করা হয়। কথিত আছে ওই মুসলিম নারী এক ডাকাতদলের হানা থেকে গ্রামবাসীকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রাণ দিয়েছিলেন।
মধ্যযুগীয় কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে জানা যায়, ঝুলাসান গ্রামে একবার একটি দুর্ধর্ষ ডাকাতদল হামলা চালায়। সে সময় ডাকাতদের প্রতিরোধ করার জন্য দোলা খুবই সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে গ্রামবাসীকে রক্ষা করেন। কিন্তু দোলা নিজে বাঁচতে পারেননি। ডাকাতদের সঙ্গে যুদ্ধ করার সময় তিনি নিহত হন।
প্রাচীন নথিপত্রে আরো উল্লেখ আছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পরপরই দোলার দেহ ফুলে পরিণত হয়। এরপর দোলার সম্মানার্থে গ্রামবাসীরা দোলার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের স্থানে একটি মন্দির নির্মাণ করেন।
ওই মন্দিরে দোলার উপাসনাও শুরু হয় কিছুদিনের মধ্যে। ফলে এর নাম দেওয়া হয় দোলা মাতা মন্দির। কিন্তু বিস্ময়কর বিষয় হলো মন্দিরটিতে কোনো মুর্তি নেই। তবে একটি বড় পাথরকে শাড়ি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ওই পথরটিকেই দোলা দেবীর প্রতীক মনে করা হয় এবং পূজা করা হয়। মন্দিরটির প্রতি গ্রামবাসীদের এতটাই ভক্তি যে তারা সম্প্রতি ৪ কোটি রুপি ব্যয় করে একটি জাঁকজমকপূর্ণ মন্দির বানিয়েছে।
গ্রামটি ভারতের প্রথম নারী মহাকাশবিজ্ঞানী সুনিতা উইলিয়ামস এর জন্মস্থান হওয়ার কারণেও বিখ্যাত। একবার সুনিতা উইলিয়ামস তার বাবার সঙ্গে দোলা মাতা মন্দিরে পূজা করতে গেলে মন্দিরটি ভারতের গণমাধ্যমের নজরে আসে। সুনিতার বাবা ওই গ্রামে তার পরিবার নিয়ে ২২ বছর বাস করেছেন।
কথিত আছে দোলা মাতা মন্দির ওই গ্রামবাসীদের বিদেশে বসবাসের বাসনা পূরণ করে। গ্রামটির ৭ হাজার বাসিন্দার মধ্যে ১৫০০ জনই ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা হয়ে গেছেন। আর ওই গ্রামটির যারা বিদেশে বসবাস করছেন তারা যখনই ভারতে আসেন তখনই মন্দিরটিতে উপাসনা করতে যান। সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া
বাংলাদেশ সময় : ১৬৫৪ ঘণ্টা, ১১ অক্টোবর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ