ভারতের উড়িষ্যার জাজপুর জেলার মানুষের কাছে সংঘমিত্রা শেঠি নামটা বেশ পরিচিত। বছর দুয়েক আগে ২২ বছরের এই তরুণী একটা মদের দোকান বন্ধ করে দিয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিলেন। তারপর থেকে মদ-বিরোধী নানা অভিযানে যুক্ত থেকেছেন তিনি। কিন্তু এবার তাকে মদ-বিরোধী অবস্থান তীব্র করতে হলো নিজের বিয়ের দিনে।
হবু স্বামীর মুখ থেকে মদের গন্ধ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই তিনি বিয়ের মণ্ডপ ছেড়ে উঠে যান, ভেঙে দেন বিয়ে। সেই হবু বর, হাদিবন্ধু শেঠি, কলকাতায় পাচকের কাজ করেন। তাদের বাড়িও একই জেলার প্রধানপান্ডা গ্রামে। ২৮ বছরের হাদিবন্ধু বোধহয় জানতেন না যে বানিয়ামালা গ্রামের ওই তরুণীর কাছে মদ কতটা অপছন্দের বস্তু।
বানিয়ামালা গ্রামের বাসিন্দা গোবিন্দচন্দ্র জেনা বলেন, ‘বিয়ের মণ্ডপে মন্ত্র পড়া চলছিল সেই সময়ে। হঠাৎ আমরা খেয়াল করি যে কনে সংঘমিত্রা বার বার নাক কুঁচকাচ্ছে। প্রথমে বুঝতে পারিনি বিষয়টা। কিন্তু তারপর সে রাগে ফেটে পড়ে, বলে যে বিয়ে করবে না।’ তিনি বলেন, ‘সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম! কী ব্যাপার! সে জানায় যে হবু বর মদ খেয়ে বিয়ে করতে এসেছে।’
বিয়ের মণ্ডপ ছেড়ে বেরিয়ে যান সংঘমিত্রা। পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, গ্রামের মেয়েদের নিয়ে আমরা গত দু’বছর ধরে অনেক মদের দোকান, ভাটি বন্ধ করেছি।
‘যখনই বুঝতে পারি আমার হবু স্বামী মদ খেয়ে রয়েছে, তখনই মাথায় রক্ত উঠে যায়। কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন লোক এর থেকেই বোঝা যায়।’
পাত্র আর পাত্রীর দুই পরিবারই অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেন যাতে বিয়েটা না ভাঙে। কিন্তু সংঘমিত্রা নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন। পাশে অবশ্য নিজের কয়েকজন বন্ধুকে পেয়েছিলেন তিনি, যারা বিয়ে ভেঙে দেয়াকে সমর্থন করেছিলেন।
গ্রামের বয়স্ক এবং পঞ্চায়েত প্রধান মিলি জেনা পাত্রপক্ষকে নির্দেশ দেন সোনার গয়না আর যে নগদ পাত্রীপক্ষ দিয়েছিল, সেগুলো ফেরত দিতে হবে। এর পরপরই এক পারিবারিক পরিচিত বরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে সংঘমিত্রার। বিবিসি বাংলা।