সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার একটি গ্রামে গিয়ে অন্তত ৩০০ মানুষের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ, যারা মানুষের মাংস খায়। তারা নিজেরাই স্বীকার করেছে, কীভাবে তারা মানুষের মাংস খায়। কয়েকদিন আগে মানুষের মাংসখেকো এক যুবক পুলিশের কাছে গিয়ে ধরা দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপরই বেরিয়ে আসে এই ভয়াবহ সত্য।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, পুলিশের কাছে ধরা দেয়ার সময় মানুষের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে আসেন ওই ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘মানুষের মাংস খেতে খেতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি।’ গণমাধ্যমগুলো তাকে একজন ‘গ্রাম চিকিৎসক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, যিনি এ পর্যন্ত অনেক নারীকে ধর্ষণ, হত্যা এবং অনেককে জবাই করেছেন।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে এখনো প্রচলিত আছে মানুষের মাংস খাওয়ার প্রথা। মানুষ মানুষের মাংস খায়! সভ্যতার ছোঁয়া পায়নি এমন মানুষ এখনো বসবাস করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টকোর্ট শহরে পুলিশের কাছে ধরা দেয়ার সময় হাতে করে ওই ব্যক্তি নিয়ে আসেন মানুষের একটি পা এবং হাত। এরপর পুলিশকে নিয়ে যান একটি বাড়িতে সেখানে গিয়ে আরো কিছু দেহাবশেষ পায় পুলিশ। ওই এলাকা থেকে একই অভিযোগে আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। এছাড়া চতুর্থ আরেকজনের বিরুদ্ধেও মানুষের মাংস সংরক্ষণের অভিযোগে মামলা দেয়া হচ্ছে।
এরা সবাই বাস করেন ইস্টকোর্ট শহরের এসিগোডলওয়েনি গ্রামে। মোট ৯৭১ জন মানুষের বাস সেখানে। তদন্তে বেরিয়ে আসে, গ্রামটির তিনভাগের একভাগ মানুষই মানুষের খেয়ে অভ্যস্ত। অনেকে আবার কবর খুঁড়ে লাশের মাংস পর্যন্ত খান। ওই যুবকদের গ্রেপ্তারের পরপরই গ্রামের মানুষজন স্বীকার করেছেন, তারা মানুষের মাংসের স্বাদ ভোগ করে মজা পান।
স্থানীয় কাউন্সিলর মেথেম্বেনি মাজোলা জানান, আশঙ্কা করা হচ্ছে আরো মৃতদেহ থেকে থাকতে পারে। তিনি বলেন, ‘একটা মাত্র মানুষের দেহই তাদের কাছে নেই। পুলিশ তদন্ত করে একটি পাত্রের মধ্যে আটটি কান পেয়েছে। তার মানে, বিষয়টি নিয়ে আরো তদন্ত করার আছে।’
স্থানীয় পুলিশের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন চার্মেন স্ট্রুইগ বলেন, ‘সন্দেহভাজনদের তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা এবং মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংরক্ষণের মামলা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চতুর্থজনের বিরুদ্ধে মানুষের মাংস বহনের মামলা হয়েছে। প্রথম তিন ব্যক্তি একজন নারীকে হত্যা করে তাকে কেটে টুকরো টুকরো করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘অভিযোগ আছে, ওই নারীর মাংসের কিছু অংশ তারা খেয়েছে। আর শরীরের বাকি অংশ চতুর্থ ব্যক্তির কাছে সংরক্ষণের জন্য দিয়েছে। ইস্টকোর্ট এবং আমাংউই শহরে মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত একজন ব্যক্তিকে হত্যা করার আলামতও আমরা পেয়েছি।’
এদিকে ২২, ২৯, ৩১ এবং ৩২ বছর বয়সী ওই চার ব্যক্তিকে আদালতে তোলার সময় স্থানীয়রা তাদের দেখতে সেখানে ভীড় জমায়। তাদের প্রত্যেককেই রিমান্ড দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাদের আবার আদালতে তোলা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ২৩ আগস্ট ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস