মিয়া খলিফা। ২১ বসন্তের যুবতী। জন্ম খ্রিস্টান পরিবারে। তিনি লেবানিজ বংশোদ্ভুত মার্কিনি। বার বার তিনি সংবাদ শিরোনামে এসেছেন। কারণ, তিনি একজন পর্নো তারকা। পর্নো ওয়েবসাইটগুলোতে টপ র্যাংকে তার অবস্থান। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ লেবানিজ পরিবারে জন্ম নেয়া মিয়া খলিফাকে নিয়ে তাই নানা আলোচনা, সমালোচনা। বিশেষ করে একবার হিজাব পরা অবস্থায় তাকে প্রাপ্ত বয়স্কদের একটি পর্নো ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে। তা নিয়ে তো সমালোচনার ঝড় ওঠে মধ্যপ্রাচ্যে। এবার তাকে শিরশ্ছেদ করার হুমকি দিয়েছে আইএস। তবে মিয়া খলিফা এখন আর পর্নো ছবিতে অভিনয় করেন না। তার কর্তিত মস্তকের ছবি দিয়ে হুমকি দিয়েছে আইএস- এমন দাবি করেছেন মিয়া।
তিনি দাবি করেছেন সন্ত্রাসী ওই গ্রুপটি সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে তার কাছে পাঠিয়েছে ওই ছবি। এতে তার অভিনীত ছবির কিছু দৃশ্য ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি সম্প্রতি দ্য স্পোর্টস জাঙ্কিস’কে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন। মিয়া খলিফা বলেছেন, জঙ্গিরা যা চায় তিনি তা হতে দেবেন না। তিনি বলেন, আমরা দুর্বলতা দেখাতে পারি না। তারা আসলে আমাদের দুর্বলতা দেখতে চায়। মিয়া খলিফা লেবাননের বৈরুত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান ১০ বছর বয়সে। সেখানে মিয়ামিতে অবস্থান করছেন তিনি। সেখানেই এখন তার বসবাস। ইতিহাসে তিনি গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু প্রবেশ করেছিলেন পর্নো দুনিয়ায়। রগরগে ছবি, ভয়াবহ দৃশ্য উপহার দিয়ে তিনি ওই জগতে সবার নজর কেড়েছেন। পর্নো তারকাদের মধ্যে চলে আসেন প্রথম সারিতে। অর্জন করেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা। তবে পর্নো ছবিতে অভিনয় করার কারণে তাকে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে তীব্র সমালোচনা হয়। তাকে ওই অঞ্চলের অভিশাপ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
তাকে নিয়ে যারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে সমালোচনা করেছেন, তিনি মনে করেছেন সেটা তাকে অবমাননা করার জন্য করা হয়েছে। তাই প্রতিজবাবও দিয়েছেন মিয়া খলিফা। অনেকেই তার তীব্র সমালোচনা করেছেন হিজাব পরা অবস্থায় পর্নো ছবিতে অভিনয়ের কারণে। কিছু ভিডিওতে তাকে এমন অবস্থায় রগরগে দৃশ্যে দেখা যায়। সমালোচকরা বলেন, হিজাব হচ্ছে মুসলিম নারীদের পোশাক। এই পোশাক একজন নারীর সম্ভ্রম, মর্যাদা রক্ষার। এটা ব্যবহার করে পর্নো ছবিতে অভিনয় করা মানে এ পোশাককে, মুসলিম নারীদের অবমাননা করা।
টুইটে একজন তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, শিগগিরই তার মাথা কেটে নেয়া হবে। অন্য একজন টুইট করেছেন, নরকে প্রথম নারী হবেন মিয়া খলিফা। ২০১৫ সালে তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে একটি সাক্ষাতকার দেন। তার ওই হিজাব পরে পর্নো ছবিতে অভিনয়ে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তাতে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এমন দৃশ্য করা হয়েছে স্যাটায়ার করার জন্য। হলিউডের অনেক ছবিতে এমনটা করা হয়। মিয়া খলিফার শরীরে বেশ কিছু ট্যাট্টু বা আল্পনা থাকায়ও তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন।
কারণ, ওইসব আল্পনায় রয়েছে লেবাননের জাতীয় সঙ্গীতের অংশবিশেষ। আরেক স্থানে আছে লেবানিজ ফোর্সেস ক্রস। এর অর্থ হলো, ‘আমার পিতা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সংহতি’ প্রকাশ করা। শরীরে এসব আল্পনা নিয়ে পর্নো ছবিতে অভিনয় করার মাধ্যমে তিনি লেবাননকে লজ্জায় ফেলেছেন বলে অভিযোগ আছে। এক পর্যায়ে মিয়া খলিফা স্বীকার করেন, পর্নো ছবিতে অভিনয় করার কারণে তার সঙ্গে তার পিতামাতা কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ করে দেন।
এর জবাবে তিনি বলেন, আমি পিতামাতার নামকে কাদায় নামিয়ে এনেছি। এ জন্য আমি অপরাধী মনে করি নিজেকে। এখন আমার পিতামাতার সব বন্ধুবান্ধব আমার ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানেন। কারণ, বিষয়টি লেবাননের মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারিত হয়েছে। আসলে আমার উদ্দেশ্য এটা ছিল না। লেবানন ও তুরস্ক বাদে প্রায় সব মুসলিম দেশেই এসব পর্নো ছবি বিক্রি নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, ২৭ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস