দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানের পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে ছয় শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে পরিবারের কাছে নিহতদের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৫ আগস্ট) রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে জেলা ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তল্লাশি করে লাশগুলো উদ্ধার করে।
নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন, লালমনিরহাট পৌরসভার হাড়িভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মৃত খোকন মিয়ার ছেলে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র তন্ময় মিয়া (২০), পৌরসভার নবীনগর এলাকার মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র জনি মিয়া (১৮), আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া এলাকার সাইদুর রহমানের ছেলে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র শ্রাবন (১৮), পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার বড়ইপাড়া গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে এইচএসসি প্রথম বর্ষের রাদিফ হোসেন রুস (১৭), একই জেলার রাজারহাট উপজেলার জয়কুমার গ্রামের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র রাজিব উল করিম (১৮)। নিহতের মধ্যে একজনের পুরো শরীর পুড়ে যাওয়ায় তার পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি।
জানা গেছে, রোববার শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে লালমনিরহাট জেলাজুড়ে উল্লাসে মেতে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা। বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সংসদ সদস্যদের বাসা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ লুটপাট করে দুর্বৃত্তরা।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানের শহরের কালীবাড়ি এলাকার বাসায় অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। পরে রাত আড়াইটার দিকে লালমনিরহাট ফায়ার সার্ভিসের একটি দল গিয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া বাড়িটি তল্লাশি চালিয়ে ওই ছয় শিক্ষার্থীর পোড়া লাশ উদ্ধার করে। এলাকাবাসীরা জানান, যারা বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের কয়েকজন ভেতরে আটকা পড়ে আগুনে পুড়ে মারা গেছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বিজয় মিছিলের পর থেকে ওই ছয় শিক্ষার্থী নিখোঁজ ছিল। পরে খবর পেয়ে তারা মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বিভিন্ন আলামত দেখে আগুনে পুড়ে যাওয়া পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করে। একজনের পুরো শরীর পুড়ে যাওয়ায় তার পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। তবে সে শহরের ফাকল পুলিশ লাইন্স স্কুলের নিখোঁজ শিক্ষার্থী বলে ধারণা করছেন পরিবারের লোকজন।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি ওমর ফারুক কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিতে করে বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া ছয় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন আলামত দেখে পরিবারের লোকজন পাঁচজনের পরিচয় শনাক্ত করে লাশ নিয়ে গেছে। একজনের পুরো শরীর পুড়ে যাওয়ায় তার পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি।