বগুড়ায় যুবলীগের দুই নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে বগুড়া শহরের মালগ্রাম দীঘিপাড়া ও শাজাহানপুর উপজেলার খড়না বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন বগুড়া পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য রানা পাইকার (৩৪) ও শাজাহানপুর উপজেলার খড়না ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম (২৮)। রানা পাইকার বগুড়া শহরের চাপড়পাড়া এলাকার বাসিন্দা ও নুর আলম শাজাহানপুরের খড়না ইউনিয়নের দেশমা গ্রামের বাসিন্দা। বগুড়া জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক জাকারিয়া আদিল নিহত দুজনের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে নুর আলমকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাঁর লাশ রাতেই স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। অন্যদিকে রানা পাইকারের লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত আটটার দিকে একদল দুর্বৃত্ত বগুড়া শহরের মালগ্রাম দীঘিপাড়া এলাকায় যুবলীগ নেতা রানা পাইকারের ওপর হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
রাত ১০টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার খড়না বাজারে নুর আলমকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খড়না ইউনিয়নের দেশমা গ্রামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেননি।’
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আরও একজন নিহত
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে গতকাল দিনভর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরও একজন নিহত হয়েছেন। গতকাল রাতে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। এ নিয়ে সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ছয়জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ।
অন্যদিকে গত রোববার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কলেজছাত্র মনিরুল ইসলামের (২২) মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুপচাঁচিয়া উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেন, সংঘর্ষে নিহত কলেজছাত্র মনিরুল ইসলামকে কাহালু উপজেলার বীরকেদার গ্রামে দাফন করা হয়েছে। তিনি বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারি ডিগ্রি কলেজের অর্থনীতি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, বগুড়া শহরে সহিংসতার ঘটনায় এই পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন মারা গেছেন। এর মধ্যে গতকাল সদর থানায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় মারা যাওয়া অজ্ঞাতনামা (৩০) ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। অপর পাঁচজন হলেন বগুড়া সদরের আবদুল মান্নান সরকার (৬০), শহরের দক্ষিণ বৃন্দাবনপাড়া এলাকার শিমুল ওরফে মতি (৪৫), আকাশতারা এলাকার কমর উদ্দিন বাপ্পী (২৫), বগুড়া সদরের হরিগাড়ি এলাকার শিক্ষক সেলিম রেজা (৪৫) ও গাবতলীর গোড়দহ গ্রামের জিল্লুর রহমান (৩৫)। এরা গত রোববার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক আরও বলেন, রোববার ও গতকাল দুই দিনে হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ১৫০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে চলে গেছেন।