গত ১৮ বছর ধরে সীমা গ্রুপে কাজ করছেন সানা উল্লাহ। আগে থাকতেন চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলি এলাকায়। পরিবার নিয়ে এখন কদমরসুল এলাকায় থাকেন। সানা উল্লাহ বলেন, ‘তখন প্ল্যান্টের ৪-৫ জন কাজ করছিল। এরমধ্যে দুয়েকজন আমার মতো নামাজ পড়তে গিয়েছিল। ’
‘৪টা ৪০ মিনিটের দিকে আমি আসরের নামাজ পড়তে বের হই। মসজিদের কাছাকাছি পৌঁছানোর পর হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। দ্রুত এসে দেখি, শুধু ধোঁয়া আর ধোঁয়া। ’ সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিজের বেঁচে যাওয়ার বর্ণনা এভাবেই দিচ্ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সুপারভাইজার সানা উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘নামাজ পড়তে না গেলে দুর্ঘটনায় আমিও হয়তো মারা যেতাম। নামাজ পড়তে যাওয়ায় আল্লাহ বড় বিপদ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ’
প্ল্যান্টে ৪-৫ জন কাজ করলে এত মানুষ আহত হলো কীভাবে, জানতে চাইলে সানা উল্লাহ বলেন, ‘প্ল্যান্টে কর্মরত লোক ছিল কম। বাকি যারা আহত হয়েছেন তারা সিলিন্ডার পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ির চালক, হেলপার ছিলেন। গাড়ি নিয়ে এসে সেখানে অবস্থান করছিলেন। এ সময় বিস্ফোরণ হলে তারা আহত হন। ’
তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর দ্রুত আমরা মালিকপক্ষকে খবর দিই। পাশাপাশি হতাহতদের উদ্ধার করে মেডিকেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ’
গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের প্ল্যান্টে ঘটে বিস্ফোরণের ঘটনা। এতে নিহত হয়েছেন ছয়জন। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে দুজন চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন। অন্য ১৮ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পরদিন রবিবার দুপুর ১২টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম জানান, দুর্ঘটনার সময় প্রতিষ্ঠানটিতে ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিলেন। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন। অন্যরা আহত হয়েছেন। তাদেরকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি যারা আহত হয়েছেন, তারা বাইরের লোক। বিস্ফোরণের ঘটনায় লোহার টুকরা উড়ে গিয়ে পড়ে তারা হতাহত হয়েছেন।