আজ ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন, স্বাগত ২০২৩!

কালের গহ্বরে আরও একটি বছর বিলীন হয়ে গেল। এলো নতুন বছর ২০২৩। পৃথিবী সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই সৌরজগতের নিখুঁত নিয়মে প্রতিদিন সূর্যোদয় হয়। প্রকৃতির নিয়মেই নতুন আরেকটি দিন, আরেকটি মাস, আরেকটি বছর আসে। আগামীর দিনগুলোতে অনিশ্চয়তা কেটে গিয়ে শুভময়তা ছড়িয়ে যাবে পৃথিবীময়, এ আশায় বুক বাঁধছে মানুষ। রাতের অন্ধকার শেষে পুব আকাশে লাল সূর্যের উদয়ে দূর হোক সব গ্লানি আর জরা। নতুন ভোর নিয়ে আসুক সুসংবাদ, করোনা মহামারি ও যুদ্ধ থেকে মুক্তি পাক বিশ্ববাসী। বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক শান্তি— এই প্রত্যাশায় সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা অনুযায়ী ইংরেজি নববর্ষের প্রথম দিন আজ। ২০২৩ সালের প্রথম দিন। নতুন বছরটি যেন প্রতিটি মানুষের মন থেকে সব গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। গত বছরের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব খুঁজতে খুঁজতে নতুন বছরকে সামনে রেখে আবর্তিত হবে নতুন নতুন
স্বপ্নের।

বাংলাদেশে ইংরেজি নববর্ষ পালনের ধরন বাংলা নববর্ষ পালনের মতো ব্যাপক না হলেও এ উৎসবের আন্তর্জাতিকতার ছোঁয়া থেকে বাংলাদেশের মানুষও বিচ্ছিন্ন নয়।

শনিবার যে দিবসকে কালস্রোতে বিলীন করে পশ্চিমে অস্ত গেল সূর্য, তা ফেলে আসা দিন। থার্টি ফার্স্টে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ পরমানন্দে ২০২৩ সালকে বরণ করেছে। আজ নতুন দিনের নতুন সূর্যালোকে স্নান করে সিক্ত হবে জাতি-বর্ণ-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিগত বছরের সব কালিমা ধুয়ে-মুছে নতুন কেতন ওড়াতে ওড়াতে এগিয়ে যাবে সময় ও সভ্যতা। অনাবিল স্বপ্ন আর অফুরন্ত প্রাণোন্মোদনা নিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় অগ্রসর হবে মানুষ। বিগত সময়ের সব ভুল শুধরে নেওয়ার সময় এসেছে আজ।

করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত ২০২২ বিদায় নিল। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল ও মেট্রোরেলের মতো বৃহৎ অবকাঠামো উদ্বোধন এবং জাতীয় নারী ফুটবল দলের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়, এসব কারণে ২০২২ সাল ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। নতুন বছরে অগ্রগতির পথে সব জটিলতা দূর হবে—এটাই সবার প্রত্যাশা। মহামারির ধাক্কা সামলে নিয়ে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাক।

রাজনৈতিক যোগ-বিয়োগ, ধর্মীয় সম্প্রীতি-সহিংসতা, আন্তর্জাতিক শুভ-মন্দ ঘটনার প্রেক্ষাপটে হোঁচট খেলেও আবারও উঠে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। বিপদসঙ্কুল পথেই দীপ্ত পায়ে হেঁটেছে। বিদায়ী বছরের পূর্ব মুহূর্তে চলে সালতামামির আয়োজন। হিসেব-নিকেশ, চুলচেরা বিশ্লেষণ চলে মাসজুড়ে। যা কিছু ঘটেছে, তা আমাদের চোখের সামনেই। চোখ বুজলেই তা দেখতে পাই। তবুও স্মরণ করিয়ে দেওয়া, একটু আলোড়িত করা। কবির ভাষায়, ‘রূপ রস ও গন্ধময়/পৃথিবী হতে বিদায় লয়/ পুরাতন বর্ষ শেষ হয়।’

পুরাতনকে হাসিমুখেই বিদায় দিতে প্রস্তুত দেশ। প্রস্তুত শেষ রজনী উদযাপনে। স্বাগত জানাব নতুন সূর্যকে। বাংলার সর্বস্তরের মানুষের জন্য শুভময় সফলতম বছর আসুক—এ প্রার্থনা করবে সব ধর্মের মানুষ। সবশেষেও বলতে হয়, ‘মুকুলিত সব আশা/স্নেহ, প্রেম, ভালোবাসা/জীবনে চির স্মৃতি হয়ে রয়, পুরাতন বর্ষ বিদায় লয়।/নববর্ষের আগমন হয়।’ সব আশা-স্নেহ-ভালোবাসা স্মৃতি হয়ে থাকুক। আগামী আসুক পুষ্পশোভিত হয়ে। প্রজ্বলিত সূর্যের আলোকচ্ছটায় আলোকিত হোক বিশ্ব। বিশ্বের যাবতীয় মানুষের কল্যাণ হোক। বাংলাদেশ উত্তরোত্তর সফলতার দিকে এগিয়ে যাক। বিদায় ২০২২, স্বাগত ২০২৩।

Scroll to Top